উদ্বোধনের অপেক্ষায় নরসিংদী ও গাজীপুর জেলাবাসীর দীর্ঘ প্রত্যাশিত শীতলক্ষ্যা সেতু

১৪ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৩০ পিএম | আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৩ পিএম


উদ্বোধনের অপেক্ষায় নরসিংদী ও গাজীপুর জেলাবাসীর দীর্ঘ প্রত্যাশিত শীতলক্ষ্যা সেতু
আসাদুজ্জামান রিপন শীতলক্ষ্যা নদীতে নির্মিত সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে চালু হতে যাচ্ছে নরসিংদী ও গাজীপুর জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা আঞ্চলিক মহাসড়ক। সড়কটি চালু হলে দুই জেলার আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে দূরত্ব কমবে সিলেট ও উত্তর অঞ্চলের। চলতি মাসেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতুটির উদ্বোধন করতে পারেন বলে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ। সড়ক বিভাগ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নরসিংদী ও গাজীপুর জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণ কাজ হয়েছে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে। কিন্তু ৪০ কিলোমিটারের সড়কটির চরসিন্ধুরে শীতলক্ষ্যা নদীতে সেতু নির্মাণ না হওয়ায় চালু হচ্ছিল না যানবাহন চলাচল। এলাকাবাসীর প্রত্যাশিত সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন হওয়ার পর ২০১৬ সালে নির্মাণ কাজ শুরু করে নরসিংদী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। ২৬ মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে সেতুটি। ৫ শত ১০ দশমিক ৪০২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ২৫০ মিটার প্রস্থের এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ শত ২৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সেতুটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সড়কটি চালু হলে শিল্প সমৃদ্ধ গাজীপুর ও নরসিংদী জেলার আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি আরও সহজতর হবে ঢাকার সঙ্গে সিলেট ও উত্তরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ। এতে চাপ কমবে গাজীপুর থেকে ঢাকা হয়ে কাঁচপুর ও টঙ্গি সড়ক হয়ে চলাচলকারী পরিবহনের। অবসান হবে দুই জেলার মানুষের নৌকায় করে শীতলক্ষা নদী পার হওয়ার দুর্ভোগ। পলাশ উপজেলার চরসিন্ধুর ইউপি সদস্য ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আগে নদী পার হতে গিয়েও দুর্ভোগ ছিল, কাঁচপুর বা টঙ্গি ঘুরে গাজীপুর যেতেও সময় অতিরিক্ত সময় লাগতো। এখন শীতলক্ষায় সেতু নির্মাণের ফলে গাজীপুরের কালিগঞ্জের সাথে আমাদের পলাশ তথা নরসিংদী অঞ্চলের যোগাযোগ সহজতর হয়েছে। চরসিন্ধুর শহীদ স্মৃতি কলেজের সহকারী অধ্যাপক বজলুল করিম পাঠান বলেন, এ সেতু শুধুমাত্র দুই জেলার আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে-ই ভূমিকা রাখবে না, সড়ক পথে ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব কমবে সিলেট ও উত্তর অঞ্চলের। এটা এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী ছিল, বর্তমান সরকার সেটা পূরণ করেছে। চরসিন্ধুর ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন রতন বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় কৃষি ও শিল্প সমৃদ্ধ দুই জেলা গাজীপুর ও নরসিংদীর জনগণের মধ্যে তেমন যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিলো না। এখন শীতলক্ষা সেতু দুইপারের মানুষের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যসহ সকল ক্ষেত্রে বন্ধন তৈরি করবে। এলাকায় শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে, বেকার সমস্যার সমাধান হবে। নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স এর প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীতে দীর্ঘ প্রত্যাশিত সেতু না থাকায় গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা আঞ্চলিক মহাসড়কটি কাজে আসছিলো না। সড়কটি গাজীপুরের আজমতপুর থেকে সরাসরি নরসিংদীর ইটাখোলায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যুক্ত হওয়ায় দুই জেলার ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর নরসিংদীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মনিরুজ্জামান বলেন, আগামী ৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শীতলক্ষ্যা নদীতে নির্মিত সেতুটির উদ্বোধন করতে পারেন। আর এ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা আঞ্চলিক মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হবে।


এই বিভাগের আরও