মনোহরদীতে আনসার কমান্ডার নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ

২৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:১৮ পিএম | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪, ১০:৩২ এএম


মনোহরদীতে আনসার কমান্ডার নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ

মনোহরদী প্রতিনিধি:

নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় আনসার কমান্ডার এবং সহ কমান্ডার নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ডার ভিভূতি ভূষন প্রামাণিক এবং প্রশিক্ষক নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে জানা যায়, মনোহরদী উপজেলাধীন ১২ ইউনিয়নের প্রতিটিতে একজন করে আনসার কমান্ডার ও একজন সহকারী কমান্ডার। উপজেলা পর্যায়ে একজন পুরুষ কোম্পানি কমান্ডার, এক জন সহকারী কোম্পানী কমান্ডার, একজন মহিলা কোম্পানী কমান্ডার এবং একজন সহকারী মহিলা কোম্পানী কমান্ডারসহ ২৮ জনকে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

ইতিপূর্বে এসব পদের জন্য একজন করে লোক থাকলেও তারা ছিল নামেমাত্র। তাদের কোন প্রকার সম্মানী এবং নিয়োগপত্র ছিল না। নিয়ম অনুসারে এখন উল্লেখিত প্রত্যেক পদের বিপরীতে এক জন করে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়ার কথা। নিয়োগ কার্যক্রমের অগ্রগতির জন্য প্রার্থী নির্বাচন করে নির্বাচিত প্রার্থীদের কাগজপত্র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করার কথা উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তার।

প্রার্থী নির্বাচনের সে সুযোগে হাতে পেয়ে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ডার বিভূতি ভূষণ প্রামাণিক প্রশিক্ষক নাজমুলকে সহযোগী করে আনসার কমান্ডার পদের নিয়োগের জন্য ২৫ হাজার টাকা এবং সহকারী কমান্ডার নিয়োগের জন্য ১৭ হাজার টাকা করে প্রায় ছয় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ার কারণে যোগ্য ব্যক্তিদেরকে পূর্বের দায়িত্ব থেকে বাদ দিয়ে এই পদে নতুন ও অনভিজ্ঞদের নিয়োগ দেওয়ার কথা আলোচনায় আসছে। এর আগে এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনসার নিয়োগে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকগুলোতে ফলাও করে প্রকাশিত হলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

এতে সাধারণ আনসার এবং ভিডিপি সদস্যদের মনে নেতিবাচক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বিনা পয়সায় দায়িত্ব পালন করা যোগ্য ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে এই পদে নতুন ও অনভিজ্ঞ লোকদের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

আনসার সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা বিভূতি ভূষণ প্রামাণিক ও প্রশিক্ষক নাজমুল ইসলাম মনোহরদী উপজেলায় যোগদান করার পর থেকে এ অফিসে ঘুষ লেনদেন যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

বয়োজেষ্ঠ্য একজন আনসার সদস্য আক্ষেপ করে বলেন, ‘এই বাহিনীকে ভালোবাসি বলে নিজের শ্রম, অর্থ-সম্পদ বিনামূল্যে ব্যয় করেছি। অথচ সকল যোগ্যতা থাকা সত্বেও নিজের সন্তানের নিয়োগের জন্য কর্মকর্তাদের ২৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।’

উপজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক নাজমুল ইসলামের বক্তব্য নেয়ার জন্য তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা বিভূতি ভূষন প্রামাণিক বলেন, আনসার কমান্ডার নিয়োগের এখতিয়ার আমার নেই। আমি শুধুমাত্র কাগজপত্র প্রস্তুত করি। এ নিয়োগে কোন ধরণের অর্থ লেনদেন হয়নি। তবে কেউ নিয়ে থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এ ব্যাপারে মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিয়া আক্তার শিমু বলেন, আনসার ও ভিডিপি অফিসের অনিয়মের বিষয়টি একজন মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েকজন মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।



এই বিভাগের আরও