দূরত্ব শেখাবে ভালোবাসার গুরুত্ব

১৬ জানুয়ারি ২০১৮, ০৪:৩২ এএম | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০৩ পিএম


দূরত্ব শেখাবে ভালোবাসার গুরুত্ব
অনলাইন ডেস্ক [caption id="attachment_1303" align="alignnone" width="1280"] ছবিঃ সংগৃহীত[/caption] ভালোবাসার নাকি নির্দিষ্ট কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই, নেই সময় বা যুগের সীমাবদ্ধতা। যখন কেউ প্রেমে পড়ে তখন দূরত্বকেও আর কোনো বাধা মনে হয় না। বরং বলা হচ্ছে, দূরত্ব প্রেমের সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করে। জীবনধারা বিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটা সম্পর্ককে দীর্ঘমেয়াদি করতে পাশাপাশি থাকাটা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, দূরত্ব ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দূরত্ব আপনাকে শেখাবে কীভাবে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হয়। চলুন দেখে নিই, লং ডিসটেন্স রিলেশনশিপ বা দূরে থাকা সম্পর্কগুলোর উপকারিতা। একা বাঁচতে শেখাবে আপনি নিশ্চয়ই সারা জীবনই কোনো সম্পর্কে ছিলেন না। অথচ দেখুন, সম্পর্কে জড়ানোর পর থেকেই সঙ্গীর ওপর কেমন নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। ফলে সঙ্গীর ব্যস্ত্যতা, আপনার জীবনে একাকিত্বের জন্ম দিচ্ছে, এই নিয়ে চলছে কথাকাটাকাটি, মান-অভিমান, এমনকি কখনো কখনো বিচ্ছেদও। কিন্তু আপনার আর আপনার সঙ্গীর মধ্যে যদি পথের দূরত্ব থাকে তাহলে আপনি নিজের একাকিত্বকে যেমন উপভোগ করতে পারবেন তেমনি পারবেন নতুন বন্ধু তৈরি করতে। অন্যকে ঘিরে নয়, বরং নিজেরও যে জীবন আছে সেটা উপলব্ধি করতে পারবেন। শিখবেন কীভাবে একা যে কোনো পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়। ধৈর্য ধারণ করতে শেখায়, ভালোবাসা তীব্র করে সাধারণত সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেখা যায় নানা কারণে একজন মানুষ তাঁর সঙ্গীর প্রতি বিরক্ত হয়ে পড়েন। যেমন, হয়তো সঙ্গীকে ফোন করছেন কিন্তু তিনি ফোন ধরছেন না। কারণ, হয়তো সেই সঙ্গী কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত। কিন্তু অপরজনের মন মানছে না। পাশাপাশি একই ছাদের নিচে থাকার পরও এই ধৈর্যটুকু ধারণ করা হয়তো অনেক সময়ই হয়ে ওঠে না। কিন্তু যে সম্পর্কগুলোয় পথের দূরত্ব রয়েছে, সেখানে এর উল্টোটা দেখা যায়। হয়তো দেখা গেল দুজনেই অপেক্ষা করছেন। দুজনেই কাজ শেষে বাড়ি ফিরলে একজন আরেকজনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলছেন। আবার অনেক দিন পর যখন দেখা হচ্ছে তখন ঝগড়াঝাটি না করে একান্তে সময় কাটাচ্ছেন। [caption id="attachment_1304" align="alignnone" width="1280"] ছবিঃ সংগৃহীত[/caption] যোগাযোগের গুরুত্ব শেখাবে এটা সব সময়ই হয়, প্রেমের ক্ষেত্রে যেই আকর্ষণটা থাকে, তা সংসার জীবনে এসে বদলে যায়। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া হয়তো কথাই বলা হয় না। সব কিছু যেন দায়িত্ব আর নিয়মের মাঝে বাঁধা পড়ে যায়। এ জন্য অনেকেই সংসার জীবনকেই দোষ দেন। কেউ হয়তো ভাবেন, সঙ্গী তো আর পালিয়ে যাচ্ছেন না, কথা পরেও বলা যাবে। অথচ পারস্পরিক এই যোগাযোগের অভাবে ভেঙে যায় অনেক সংসার। তাই সম্পর্কের গুরুত্ব বুঝতে কিছু সময়ের জন্য দূরত্ব গড়ে তুলুন। দেখা যায়, সারাদিন পরে যখন দুজনের কথা হবে তখন দিনের ছোট খুঁটিনাটি ঘটনাটিও বাদ পড়বে না সঙ্গীকে জানাতে। আর এটা উপভোগ করবেন দুজনেই। এতে করে দুজনই দুজনের গুরুত্ব ও অভাব বুঝতে পারবেন। তাই বলা যায় সম্পর্কে দূরত্ব খুব জরুরি। ত্রুটিপূর্ণ সম্পর্কের গুরুত্ব বুঝতে শেখায় দুজন মানুষের সম্পর্ককে কখনোই ‘পারফেক্ট’ বলা যায় না। কারণ এই পৃথিবীর কোনো মানুষই আসলেই একেবারে নির্ভুল চরিত্রের অধিকারী না। দূরত্ব আমাদের শেখায় যে যেমনই হোক না কেন মনের মিল হওয়াটাই বড় কথা। দুজন পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, পথের এই দূরত্ব আপনাকে আরো গভীরভাবে প্রেমে পড়তে শেখাবে। মানিয়ে নিতে শেখাবে। ছোট ছোট মুহূর্তের সৃষ্টি সম্পর্কের শুরুতে চিঠি, উপহার দেওয়া, ছবি তোলা, ঘুরতে যাওয়ার বিষয়গুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কেন যেন কমতে থাকে। কিন্তু পুরোনো সম্পর্কে নতুনত্ব আনতে, আরো প্রাণবন্ত করে তুলতে এই ছোট ছোট বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হয়তো ভালোবাসার ক্ষেত্রে উপহার দেওয়া-নেওয়ার কোনো গুরুত্ব আপনার কাছে নেই। কিন্তু অপরপক্ষকে নিজের ভালোবাসার কথা জানানোও জরুরি, এটা ভুলে গেলে চলবে না। অনেক দূর থেকে আপনার সঙ্গী যখন ছোট্ট একটা চিঠি বা উপহার পাঠাবেন তখন সেটিতেই আপনি পাবেন সঙ্গীর ঘ্রাণ। সেই ছোট্ট জিনিসটাই তখন হয়ে উঠবে মহামূল্যবান। আর আপনার এই আনন্দই সঙ্গীকে কাছে না থাকার কষ্ট ভুলিয়ে দেবে।


এই বিভাগের আরও