অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধে নীতিমালা তৈরি করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

৩০ জুন ২০১৯, ০৭:২৩ পিএম | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২২ এএম


অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধে নীতিমালা তৈরি করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রয়োজন ছাড়া প্রসূতির অপ্রয়োজনীয় সিজার কার্যক্রম রোধে এক মাসের মধ্যে একটি নীতিমালা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও স্টেক হোল্ডারদের এই কমিটিতে রাখতে বলা হয়েছে নির্দেশে। এ কমিটি আগামী ৬ মাসের মধ্যে নীতিমালা তৈরি করে আদালতে দাখিল করবেন।

রোববার (৩০ জুন) জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট গুলশান জুবায়দা, আয়েশা আক্তার, ব্যারিস্টার ফারিয়া আহমেদ, ব্যারিস্টার মুনিজা কবির ও নিলুফার ইয়াসমিন টুম্পা।

আদালতে এ বিষয়ে ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে একটি আদেশ দিয়েছেন। ওনারা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি করবেন এক মাসের মধ্যে। ছয় মাসের মধ্যে একটি নীতিমালা কোর্টে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। নীতিমালার মূল বিষয়টা হবে যে মেডিক্যালে  অপ্রয়োজনীয় যে সিজারিয়ান সেকশনগুলো হচ্ছে, এটার হার যে বৃদ্ধি হয়ে যাচ্ছে সেটা কমানোর।’

তিনি আরো বলেন, ‘মেডিক্যালের অপ্রয়োজনীয় যে সিজারিয়ান সেকশনগুলো দেখছি, সে বিষয়ে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন এর মতে শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ এর বেশি সিজার কোনো দেশেরই প্রয়োজনীয় হতে পারে না। বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে এটা প্রায় ৩১ শতাংশ। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ৮৩ শতাংশ এবং সরকারি হাসপাতালে এটার হার ৩৫ শতাংশ। এনজিও হাসপাতালগুলোতে ৩৯ ভাগ। এই যে একটা এলার্মিং রাইজ, রেটটা যে বৃদ্ধি পাচ্ছে এটাকে থামানোর জন্য এ মামলা।’

ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম, আদালতে চায়না এবং ব্রাজিলের উদাহরণ তুলে ধরেছি উল্লেখ করে রাশনা ইমাম বলেন, চায়না সিজারের হার বিশ্বের মধ্যে খুবই খারাপ অবস্থায় ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে নুতন রুলস রেগুলেশন প্রণয়ন এর কারণে এটা কমছে। ব্রাজিলেও একই জিনিস দেখতে পেলাম।

তিনি বলেন, গ্রামে গঞ্জে যে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো আছে সেগুলো কোনো ধরনের সরকারি মনিটরিং ছাড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সিজারিয়ান সেকশন করে যাচ্ছে। এটা থেকে অনেকের অমানবিক মৃত্যুও ঘটেছে।

রুলে সরকারি ও বেসরকারি ক্লিনিকে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান প্রতিরোধে কার্যকর তদারকি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। 

এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনযুক্ত করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের পক্ষে তাদের আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম এ রিট করেন। 

গত ২১ জুন বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ বলছে বাংলাদেশে গত দুই বছরে শিশু জন্মের ক্ষেত্রে সিজারিয়ানের হার বেড়েছে ৫১ শতাংশ।

বিষয়টিকে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছে, এতে বাবা-মায়েদের সন্তান জন্মদানে ব্যাপক পরিমাণে খরচের ভার বহন করতে হচ্ছে।

এর আগে সিজার বন্ধে গত ২৫ জুন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন আরেকটি রিট দায়ের করেছিলেন। তবে সেটির শুনানি হয়নি।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও