আজ ১২ ডিসেম্বর নরসিংদী মুক্ত দিবস
১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:৩৭ এএম | আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫, ০২:৫৭ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আজ নরসিংদী হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে (১২ ডিসেম্বর) পাকবাহিনীর পরাজয় ও আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে নরসিংদী পাক হানাদার মুক্ত হয়েছিল। এ দিনে সম্মিলিত মুক্তি বাহিনীর প্রবল প্রতিরোধের মুখে নরসিংদী শহরসহ গোটা জেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এ দিনটি নরসিংদীবাসীর কাছে অত্যন্ত গৌরবোজ্জল ও স্মরণীয় দিন। প্রতি বছরই দিবসটিতে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে জেলা প্রশাসন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
৭১’ সালে দীর্ঘ ৯ মাস নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক খন্ড যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ওই খন্ড যুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর নির্মমতার শিকার হয়ে শহীদ হয়েছিলেন ১১৬ জন বীর সন্তান। এর মধ্যে নরসিংদী সদরে ২৭ জন, মনোহরদীতে ১২ জন, পলাশে ১১, শিবপুরের ১৩, রায়পুরায় ৩৭ ও বেলাব উপজেলার ১৬ জন। এছাড়া বহু মা-বোনের নিরব আত্মত্যাগের বিনিময়ে নরসিংদী হানাদার মুক্ত হয়।
রাজনৈতিকভাবে অগ্রসরমান রাজধানী ঢাকার অদূরে নরসিংদী জেলায় মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল এক অদম্য শক্তি নিয়ে, স্বপ্রণোদিতভাবে। যুদ্ধ অনভিজ্ঞ, তরুণ ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক, জনতা প্রতিশোধ স্পৃহায় অটুট মনোবল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। মারনাস্ত্রের চেয়ে মনোবলই যে অধিকতর শক্তিশালী পুরো যুদ্ধকালীন সময়ে তার প্রমাণ রেখেছেন নরসিংদীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
১৯৭১ এ পাক বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞের কথা মনে করে এখনো ভয়ে আতকে উঠেন নরসিংদীবাসী। স্বজন হারানোদের কান্নায় এখনও ভারী হয়ে উঠে আকাশ-বাতাস। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর নির্মমতার সাক্ষী অনেক গণকবর রয়েছে জেলাজুড়ে। স্বাধীনতার ৪৮ বছর অতিবাহিত হলেও চরম অযতœ অবহেলায় পড়ে আছে গণকবরগুলো। সংরক্ষণ না করায় অরক্ষিত এসব গণকবরের শেষ চিহ্নটুকু মুছে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নরসিংদীর এমন কোন স্থান নেই যেখানে ৭১-এ শত্রু সেনাদের নিষ্ঠুর ছোবল পড়েনি। ১৯৭১ সালে নরসিংদী জেলার বেশ কয়েকটি স্থানে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় পাক বাহিনীর সদস্যরা। স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকেই নরসিংদী জেলায় প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। ৭১’এ বর্তমান জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৭/২৮ জনকে ধরে নিয়ে পাকসেনাদের ক্যাম্প নরসিংদীর টেলিফোন এক্সচেঞ্জে আটক রাখা হতো। নির্যাতন শেষে তাদের নিয়ে যাওয়া হতো বর্তমান ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাঁচদোনা মোড় সংলগ্ন তৎকালীন লোহাপুল এর নীচে। সেখানে ৪/৫ জনকে বসিয়ে রেখে তাদের সামনে ২০/২২ জনকে গুলি করে হত্যা করে পাকবাহিনী। হত্যা শেষে লোহারপুলের নীচে সকলকে একসাথে মাটি চাপা দেয়া হয়। আজো স্থানীয় বাসিন্দাদের কানে সেদিনের আর্তচিৎকার ভেসে আসে। বোমা বর্ষণ ও নরসিংদী দখলের পর পাক বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের ফলে বিক্ষুদ্ধ অসহায় জনতা আক্রোশে ফুসতে থাকে। নরসিংদীর নেতৃবৃন্দ, ই.পি.আর, বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিদ্রোহী সৈন্য এবং যুবক শ্রেণি দ্রুত নরসিংদী শহর ছেড়ে চলে যায়।
৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক খন্ড যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। ৭১’এর মার্চে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি কোম্পানী হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে নরসিংদীতে ই.পি.আর, আনসার ও পুলিশ বাহিনীর সাথে মিলিত হয়। এতে হাজার হাজার ছাত্র জনতা তাদেরকে স্বাগত জানায়। নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলে শত শত যুবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে শুরু হয় প্রতিবাদ. প্রতিরোধ ও চোরাগুপ্তা হামলা। স্থল পথে মুক্তিবাহিনীর প্রবল প্রতিরোধে টিকতে না পেরে ৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর পাক বাহিনীর পরাজয় ও আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে নরসিংদী পাক হানাদার মুক্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধে নরসিংদী জেলা ছিল ২নং সেক্টরের অধীনে। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তৎকালীন মেজর জেনারেল সফিউল্লাহ। নরসিংদীকে ৩ নং সেক্টরের অধীনে নেয়া হলে কামান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন মোঃ নূরুজ্জামান।
নরসিংদী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ও সদর উপজেলার নেহাব গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নরসিংদীর মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরব্বোজ্জ¦ল ভূমিকা রয়েছে। সশস্ত্র যুদ্ধে জেলার বিভিন্ন স্থানে শত শত নারী পুরুষকে নির্বিচারে হত্যা করে গণকবর দিয়েছিলো পাকবাহিনী। গণকবরগুলোর বেশিরভাগই চিহ্নিত করা হয়েছে। বর্তমান সরকার এসব চিহ্নিত স্থানগুলো সংরক্ষণ করবে বলে আমরা আশাবাদী।
নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে নরসিংদীর বধ্যভূমিগুলো অযতœ অবহেলায় থাকবে না। বর্তমান সরকার এসব সংরক্ষণে খুবই আন্তরিক। জেলার চিহ্নিত ৭টি বধ্যভূমির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল এরমধ্যে ৫টির বরাদ্দ পাওয়া গেছে। অচিরেই মহান মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভূমি সংরক্ষণের কাজ শুরু করা হবে।
বিভাগ : নরসিংদীর খবর
- নরসিংদী বাজারে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ সমাবেশ
- নিখোঁজের ২০ দিন পর অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার, দুইজন গ্রেপ্তার
- মাধবদীতে ৬০ কেজি গাঁজাসহ দুই যুবক গ্রেপ্তার
- নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল এন্ড হোমস এ এবারও শতভাগ জিপিএসহ শতভাগ পাস
- আলোকবালীর বিএনপি নেতা কাইয়ুম সরকার বহিষ্কার
- জেলা প্রশাসন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ফল উৎসব
- পলাশে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তারের পর যুবদল নেতা বহিষ্কার
- মাধবদী বাজারে আগুনে পুড়ল ৪০ দোকান
- জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আলোচনা সভা
- আমিরগঞ্জ ইউপি কার্যালয়ে যুবকের ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী নিহত
- নরসিংদী বাজারে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ সমাবেশ
- নিখোঁজের ২০ দিন পর অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার, দুইজন গ্রেপ্তার
- মাধবদীতে ৬০ কেজি গাঁজাসহ দুই যুবক গ্রেপ্তার
- নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল এন্ড হোমস এ এবারও শতভাগ জিপিএসহ শতভাগ পাস
- আলোকবালীর বিএনপি নেতা কাইয়ুম সরকার বহিষ্কার
- জেলা প্রশাসন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ফল উৎসব
- পলাশে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তারের পর যুবদল নেতা বহিষ্কার
- মাধবদী বাজারে আগুনে পুড়ল ৪০ দোকান
- জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আলোচনা সভা
- আমিরগঞ্জ ইউপি কার্যালয়ে যুবকের ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী নিহত