ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে ৪৩ জন নিহত

০৩ জানুয়ারি ২০২০, ০৬:০১ পিএম | আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪, ০৯:০৭ এএম


ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে ৪৩ জন নিহত
নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) স্থানীয় কর্মকর্তারা এই দুর্যোগে সবমিলিয়ে ৪৩ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। এর মাত্র ১ দিন আগে এই সংখ্যা ৩০ বলে উল্লেখ করা হয়েছিলো।

শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স জানায়, বন্যা, ভূমিধস ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বুধবার জাকার্তায় নিহতের সংখ্যা ৪৩ য়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ বৃহস্পতিবার রাতেই নিহতের সংখ্যা ৩০ বলে জানিয়েছিলো সংস্থাটি। এছাড়া বন্যায় ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে আরো ১০ হাজারের বেশি মানুষ।

এর আগে বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা জানায়, মঙ্গলবার রাতে জাকার্তার বাসিন্দারা যখন পটকা আর আতশবাজি ফুটিয়ে নতুন বছর উদযাপনে মগ্ন ছিলো তখনই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। আকস্মিক বৃষ্টির ফলে গোটা শহর বন্যায় প্লবিত হয়। শহরের কোনো কোনো এলাকায় ১০ ফুটের মতো পানি জমেছে।

রানওয়েতে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করায় শহরের আভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে সেখানে আটকা পড়েছেন ২০ হাজারের বেশি যাত্রী। বন্যার জলে সড়কগুলো প্লাবিত হওয়া যানবাহন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে। বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শহরের রেলওয়ে ব্যবস্থাও। জলমগ্ন হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন ঘরবাড়ি ও ভবনও। বন্যায় যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে অনেক স্থানে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। ফলে পানি ও বিদ্যুৎ সঙ্কটে পড়েছে রাজধানীবাসী।

ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র আগুস উইরোউ জানান, মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে রাজধানীর আশপাশের কমপক্ষে ৯০টি এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ভূমিধস হয়েছে রাজধানীর বাইরের কোতা দেপক শহরেও। বুধবার প্রাথমিকভাবে জাকার্তা ও আশপাশের এলাকায় বন্যায় কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছিলেন ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে ৮ জনই জাকার্তার বাসিন্দা।

সংস্থার মুখপাত্র আগুস উইরোউ আরো জানান, নিহতদের মধ্যে ১৬ বছর বয়সী একজন স্কুলছাত্রও রয়েছে। জাকার্তায় ওই কিশোরসহ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে মোট ৪ জন। বন্যার কারণে অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন আরো ৩০ হাজারের মতো মানুষ।

টেলিভিশন ফুটেজ এবং স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, রাস্তায় কাদার মধ্যে আটকা পড়ে আছে কয়েক ডজন গাড়ি। রাবার বোটে করে বন্যার্তদের উদ্ধার করছেন সেনা ও উদ্ধারকর্মীরা। বন্যার কারণে বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন জাকার্তার বহু মানুষ। সেখান থেকে শিশু ও বয়স্কদের বের করে আনতে গলদঘর্ম হচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।

বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে মোতায়েন করা হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো উদ্ধারকর্মী। তারা ইতিমধ্যে রাজধানী জাকার্তা থেকে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে গেছেন। কর্তৃপক্ষ শহরের লোকজনকে সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, গোটা বর্ষা মৌসুম জুড়ে জাকার্তায় বন্যা চলতে পারে। দেশটিতে বর্ষা মৌসুম শেষ হবে আগামী এপ্রিলে।


বিভাগ : বিশ্ব


এই বিভাগের আরও