২০১৯ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬২৮

০২ জানুয়ারি ২০২০, ০২:৩০ এএম | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম


২০১৯ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬২৮

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সদ্যবিদায়ী ২০১৯ সালে ৪ হাজার ২১৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ নারী ও ৭৫৪ শিশুসহ অন্তত ৪ হাজার ৬২৮ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৮ হাজার ৬১২। আহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ৬১৩ ও ৩৯৯। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মহাসড়ক, জাতীয় মহাসড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কসহ সারা দেশে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে। বুধবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকার গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) এক বিবৃতিতে সড়ক দুর্ঘটনার বার্ষিক প্রতিবেদন-২০১৯’-এ এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২৪টি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং ৯টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

গত বছর সড়ক দুর্ঘটনা ও আহতের সংখ্যা পূর্ববর্তী বছরের (২০১৮ সাল) তুলনায় কম হলেও প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ২০১৮ সালে চার হাজার ৩১৭টি দুর্ঘটনায় চার হাজার ৫৮০ জন নিহত ও দশ হাজার ৮২৮ জন আহত হয়েছিল। আর গত বছর দুর্ঘটনা ঘটেছে চার হাজার ২১৯টি, এতে নিহত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৪ হাজার ৬২৮ ও ৮ হাজার ৬১২।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে ৩৮৩টি দুর্ঘটনায় ৫৩ নারী ও ৭১ শিশুসহ ৪১১ জন নিহত এবং ৫৮ নারী ও ৪০ শিশুসহ ৭২৫ জন আহত হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ৪০১টি দুর্ঘটনায় ৪১৫ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ৫৮ ও ৬২। এছাড়া ওই মাসে ৮৮ নারী ও ৮৬ শিশুসহ আরও ৮৮৪ জন আহত হয়েছে। মার্চে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৮৪টি। এতে ৪৬ নারী ও ৮২ শিশুসহ ৩৮৬ জন নিহত এবং ৬৭ নারী ও ৭৬ শিশুসহ ৮২০ জন আহত হয়েছে। এপ্রিলে ৩২৭ দুর্ঘটনায় ৩৪০ জন নিহত ও ৬১০ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৩৮ ও ৫৩ শিশু রয়েছে। আর আহতদের তালিকায় নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ৪৬ ও ২৮। মে মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৯৭টি, যাতে ৪৭ নারী ও ৪৪ শিশুসহ ৩৩৮ জনের প্রাণহানি এবং ২৭ নারী ও ১২ শিশুসহ ৫০৪ জন আহত হয়েছে। জুনে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৬৭, ৪৩৯ ও ৮১৮। নিহতদের মধ্যে ৪৯ নারী ও ৬৯ শিশু এবং আহতদের মধ্যে ৫৪ নারী ও ২৫ শিশু রয়েছে। জুলাইয়ে ৩১১টি দুর্ঘটনায় ৪৬ নারী ও ৪০ শিশুসহ ৩৪৮ জন নিহত এবং ২১ নারী ও ২২ শিশুসহ ৫১৩ জন আহত হয়েছে। আগস্টে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা যথাক্রমে ৩৩৭ ও ৩৯৮। এতে ৪৭ নারী ও ৫৭ শিশুর প্রাণহানি ঘটেছে, আহত হয়েছে ৫৮ নারী ও ৩৮ শিশুসহ আরও ৮২৩ জন। সেপ্টেম্বরে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৫৩টি, এতে ৩৮ নারী ও ৬৪ শিশুসহ ৩৬৭ জন নিহত এবং ৫৭ নারী ও ১২ শিশুসহ ৮৪২ জন আহত হয়েছে। অক্টোবরে ৩৫৬টি দুর্ঘটনায় ৩৯৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ৫৫ ও ৭৮। এছাড়া এই মাসে ৩৯ নারী ও চার শিশুসহ আহত হয়েছে আরও অন্তত ৬৬৭ জন। নভেম্বরে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩১৪টি, এতে ৫৩ নারী ও ৬২ শিশুসহ ৩৪২ জন নিহত এবং ৬১ নারী ও ২৭ শিশুসহ ৬৮১ জন আহত হয়েছে। বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৮৯, ৪৪৬ ও ৬৮১। নিহতদের মধ্যে ৫৫ নারী ও ৭২ শিশু রয়েছে। আর আহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৩৭ ও ২৯।

শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) সভাপতি আশীষ কুমার দে বলেন, তাদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ১২টি প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে।

সেগুলো হলো (১). গাড়ি চালানোর সময় চালকদের বেপরোয়া মনোভাব (২). চলন্ত অবস্থায় চালকের মোবাইলে ফোনালাপ (৩). ট্রাফিক আইন অমান্য করে ওভারটেকিং ও ওভারলোডিং (৪). বিরতি ছাড়াই দূরপাল্লার সড়কে দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালানো (৫). অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ (৬). মহাসড়কে মোটরবাইকসহ ক্ষুদ্র যানবাহনের অবাধ চলাচল (৭). ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব (৮). দূরপাল্লার সড়কের বিভিন্ন স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও বেহাল দশা (৯). নিয়োগপত্র না পাওয়ায় পরিবহন কর্মীদের মাঝে হতাশা (১০). চালক ও সহকারীর কাছে দিন চুক্তিতে গাড়ি ভাড়া দেয়া (১১). বিভিন্ন স্তরে চাঁদাবাজির কারণে শ্রমিক অসন্তোষ এবং (১২). পথচারীদের অসর্কতা ও ট্রাফিক আইন ভঙ্গ।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও