বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা: উত্তাল ক্যাম্পাস

০৮ অক্টোবর ২০১৯, ০২:৫৯ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৭ পিএম


বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা: উত্তাল ক্যাম্পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে বুয়েট ক্যাম্পাস। 

ফাহাদকে (২১) হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকেই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) জড়ো হয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে থেকে মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা।

শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে মিছিলটি বুয়েট ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা আবরার হত্যার বিচার চেয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয় ও খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

বিক্ষোভ শেষে শহীদ মিনারে গিয়ে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, বুয়েট উপাচার্য বিকাল পাঁচটার মধ্যে ক্যাম্পাসে এসে জবাবদিহিতা না করলে তারা শহীদ মিনারের সামনে থেকে যাবে না।

এছাড়া বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

দাবিগুলো হলো- খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিশ্চিতভাবে শনাক্তকৃত খুনিদের সবার ছাত্রত্ব বাতিল করে আজীবন বহিষ্কার নিশ্চিত করতে হবে। দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কেন ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হননি তা উনাকে সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে আজ বিকেল ৫টার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে ডিএসডব্লিউ স্যার কেন ঘটনাস্থল থেকে পলায়ন করেছেন তা উনাকে আজ বিকেল ৫টার মধ্যে সকলের সামনে জবাবদিহি করতে হবে। আবাসিক হলগুলোতে র‍্যাগের নামে এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সকল প্রকার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বন্ধে এর সঙ্গে জড়িত সবার ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে আহসানউল্লাহ হল এবং সোহরাওয়ার্দী হলের আগের ঘটনাগুলোতে জড়িত সবার ছাত্রত্ব বাতিল ১১ নভেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আবাসিক হল থেকে ছাত্র উৎখাতের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হওয়ায় শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টকে ১১ নভেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। মামলা চলাকালীন সকল খরচ এবং আবরার ফাহাদের পরিবারের সকল ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে। সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।

এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

গেল রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর চক বাজার থানায় হত্যা একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা বরকতুল্লাহ।

এছাড়া আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করে বুয়েটের ৯ জন ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশ আটক করেছে। এছাড়া বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতিসহ কমিটির ১১ জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।


বিভাগ : বাংলাদেশ