ভৈরবে করোনার মারাত্মক সংক্রমণ, ১৫ দিনের জন্য দোকানপাট বন্ধ

০৫ জুন ২০২০, ০৭:২৯ পিএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪০ এএম


ভৈরবে করোনার মারাত্মক সংক্রমণ, ১৫ দিনের জন্য দোকানপাট বন্ধ
সংগৃহিত ছবি

ভৈরব প্রতিনিধি:

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ক্রমেই করোনা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও ৪ জন। আর নতুন করে আরও ৩৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বড় বিপর্যয় এড়াতে প্রশাসন এই উপজেলায় ১৫ দিনের জন্য সকল মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করেছে। শুক্রবার (৫ জুন) এই নির্দেশনার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।

ভৈরবে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কোনো ল্যাব নেই। নমুনা সংগ্রহ করে পাঠাতে হয় ঢাকায়। সেখান থেকে রিপোর্ট আসতে কয়েক দিন সময় লেগে যায়। বৃহস্পতিবার (৪ জুন) গত ৩০ মে ও ২ জুনের নমুনার পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। তাতে ৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৫ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এদের মধ্যে অবশ্য দু’জন পুরনো রোগী। তারা করোনামুক্ত হয়েছেন কী-না তা জানতে দ্বিতীয় দফায় নমুনা দেওয়া হয়েছিল।

ওই দুই দিনের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ সময়ে পরীক্ষাকৃত নমুনার ৪৩ দশমিক ৪২ শতাংশই পজিটিভ, যা জাতীয় হারের দ্বিগুণ প্রায়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভৈরবে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮৩ জন।

ভৈরব উপজেলা থেকে ৩১ মে, ১ জুন ও ৩ জুনের পাঠানো নমুনার রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। এগুলো এলে  আক্রান্তের সংখ্যা আড়াইশ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশংকা করছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে পৌর শহরের কেবি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় এক ব্যক্তি মারা যান। তাঁর বয়স ছিলো ৫৫ বছর। পরিবারের সদস্যরা জানায়, এক সপ্তাহের সময় ধরে তিনি জ্বরে ভুগছিলেন।

উপসর্গ নিয়ে ভোরে মারা যান জগন্নাথপুর এলাকার এক ব্যবসায়ী। ১০ দিন ধরে তিনি জ্বর-সর্দিতে ভুগছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।

সকাল আটটার দিকে মারা যান আরও এক বৃদ্ধ। তিনি উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনিও এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে জ্বর ও গলাব্যথায় ভুগছিলেন।

অপরদিকে রাত দেড়টার দিকে ভৈরবপুর মধ্যপাড়ার এক ব্যবসায়ী মারা যান। তিনিও জ্বর-সর্দিতে ভুগছিলেন বলে জানায় পরিবারের সদস্যরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা: বুলবুল আহমেদ জানান, মৃতদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন আসার পর জানা যাবে তাদের মৃত্যুর কারণ।

এদিকে ঈদের পর আবারও ভৈরবে করোনাভাইরাস শনাক্ত এবং মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও ভৈরব চেম্বারের যৌথ উদ্যোগে ৫ জুন শুক্রবার থেকে আগামী ২০ জুন শনিবার পর্যন্ত ১৫ দিনের জন্য এখানকার সকাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এই সময়ে ওষুধের দোকান এবং কাঁচামালের দোকান ছাড়া সব বন্ধ থাকবে। তবে ধান-চালের আড়ৎগুলি সকাল ১০টা থেকে ৪টা এবং পেঁয়াজ-রসুনের আড়ৎ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

এইসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা ও ভৈরব চেম্বার অব কমার্স সভাপতি মো: হুমায়ূন কবির।


বিভাগ : বাংলাদেশ