মনোহরদীতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে জোরপূর্বক জমি লিখে নেয়ার চেষ্টা

০৫ আগস্ট ২০১৯, ০৮:৫৫ পিএম | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪, ০৭:১২ এএম


মনোহরদীতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে জোরপূর্বক জমি লিখে নেয়ার চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
নরসিংদীর মনোহরদীতে জোরপূর্বক দুই কোটি ২৫ লাখ মূল্যের জমি লিখে নেয়ার উদ্দেশ্যে মিলন খান (৫০) নামে এক জমির মালিক ও ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। ব্যবসায়ী মিলন খান মনোহরদী উপজেলার নামা গোতাশিয়া গ্রামের করম আলী খান এর ছেলে।
রবিবার (৪ আগস্ট) সকালে মনোহরদী বাসষ্ট্যান্ড থেকে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মুখে তাকে অপহরণ করা হয়, পরে বিকালে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রবিবার রাতে ৫ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


গ্রেফতারকৃতরা হলো-মনোহরদী উপজেলার কোচেরচর গ্রামের জয়নুদ্দিনের ছেলে আলম শেখ, মনোহরদী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. কফিল উদ্দিনের ছেলে আরিফ আল কফি, সল্লাবাইদ গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে বাপ্পী, বিরিক এর ছেলে টিপু, সুলতান উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম। আজ সোমবার গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর পরিবার ও পুলিশ জানায়, ব্যবসায়ী মিলন খান এক বছর আগে মনোহরদী বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন তার সাড়ে সাত শতাংশ জমি দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা দাম নির্ধারণ করে পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার দক্ষিণগাঁও গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে আজম সরকারের কাছে বিক্রির জন্য মৌখিকভাবে চুক্তি করেন। এসময় আজম সরকার জমির মালিক মিলন খানকে ৫৭ লাখ টাকা নগদ দেন এবং বাকী টাকা সাতমাসে পরিশোধ করার পর জমি রেজিষ্ট্রি করার সিদ্ধান্ত হয়।
কিন্তু আজম সরকার বায়নার ৫৭ লাখ টাকা দিয়েই উক্ত জমি দখলে নিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। বর্তমানে উক্ত ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদের কাজ শেষ করে তৃতীয় তলার কাজ চলমান। এক বছর অতিক্রম হলেও আজম সরকার বাকী টাকা পরিশোধ করেননি। জমির মালিক মিলন খান তার পাওনা টাকার জন্য বারবার তাগিদ দিলেও কর্ণপাত করেননি আজম সরকার। বরং স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসী সাথে নিয়ে জোরপূর্বক ভবনের কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। তাছাড়া সে নিজেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের আত্মীয় বলে পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে।


রবিবার সকালে জমির মালিক মিলন খানকে মোবাইল ফোনে আজম সরকার জানান, আজ জমির পাওনা টাকা পরিশোধ করে জমি রেজিষ্ট্রি করা হবে। তার কথা অনুযায়ী মিলন খান সকাল নয়টায় মনোহরদী বাসষ্ট্যান্ডে উপস্থিত হলে আজম সরকার ও তার সহযোগী ১০/১২ জন সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে মিলন খানকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পার্শ্ববর্তী গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার দক্ষিণগাঁও গ্রামের মরিয়ম ট্রাস্ট ফাউন্ডেশন ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে মিলন খানকে আটক করে ভয়ভীতি দেখিয়ে পাঁচটি খালি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়। খবর পেয়ে মিলন খানের ছোট বোন গোলাপী বেগম মনোহরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ বিকালে মিলনকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।


মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, অপহরণের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ কাপাসিয়া উপজেলার দক্ষিণগাঁও থেকে অপহৃত মিলন খানকে উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় রাতেই মিলন খান বাদী হয়ে মামলা দায়ের পর পাঁচ আসামীকে আটক করে আজ সকালে আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।



এই বিভাগের আরও