মন ভাল করার জন্য ঘুরে আসুন নরসিংদীর ধাঁধার চর যা বর্ষাকালে সমুদ্র সৈকত নামে পরিচিত
১২ মার্চ ২০১৮, ০৯:৪৯ এএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০৬ এএম
নিজেস্ব প্রতিবেদক
[caption id="attachment_1895" align="alignnone" width="740"] ছবিঃ সংগৃহীত[/caption]
আড়াইশ বছর আগে গাজীপুর ও নরসিংদীর সীমানাবেষ্টিত শীতলক্ষ্যা ও ব্রহ্মপুত্র নদের তারাগঞ্জ, রাণীগঞ্জ, লাখপুর, চরসিন্দুর এলাকায় নদীর মাঝখানে ২৫০ একর আয়তনের এ চরকে অনেকে বলে মাইঝ্যার চর বা মাঝের চর। কারণ চারটি গ্রামের মাঝখানে এর অবস্থান। দূর থেকে দেখলে চরটিকে কারও কারও মনে হতে পারে এ যেন ডুবে যাওয়া টাইটানিক জেগে উঠছে।
[caption id="attachment_1976" align="alignnone" width="960"] ছবিঃ সংগৃহীত[/caption]
শীতলক্ষ্যা ও ব্রহ্মপুত্র নদের মোহনায় বিন্দু বিন্দু বালু জমতে জমতে তৈরি হয়েছে মনোলোভা এক চর। যার নাম ‘ধাঁধার চর’। আর এ চর ঘিরে পর্যটনে দেখা দিয়েছে অপার সম্ভবনা। সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা সবুজে ঘেরা ধাঁধার চর দৈর্ঘ্যে সাড়ে ৪ কিলোমিটার। বর্ষাকালে নদীর বিশাল ঢেউ দেখলে মনে হয়- এ যেন আরেক কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত। বর্ষাকালে শুধু এই ঢেউ দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা।
চরের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম চারদিকেই শীতলক্ষ্যা নদী, উত্তর-পূর্ব কোনায় ব্রহ্মপুত্র নদ। চরের পূর্ব পাশে শিবপুর-মনোহরদী ও পশ্চিম পাশে কাপাসিয়া-কালিগঞ্জ উপজেলা। দুই পাশে দুই জেলা গাজীপুর ও নরসিংদী। বর্ষা মৌসুমে দুটি নদীই পানিতে থৈ থৈ করে। শীতকালে এটি হয়ে ওঠে আরও মনোলোভা। এই চরে রয়েছে বড় বড় পেয়ারার বাগান, আমগাছ, কাঁঠাল গাছ, কলাবাগান ও বিভিন্ন জাতের ফসলি ক্ষেত। পাখির কিচির-মিচির শুনে ইচ্ছা হবে পাখি হয়ে গান গেয়ে গেয়ে উড়ে যাই চরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে।
জানা গেছে, চরের সূচনালগ্নে এর মালিকানা নিয়ে ভাওয়ালের রাজা ও বার ভূঁইয়াদের এক ভূঁইয়া মহেষ উদ্দীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। বিরোধ মেটাতে এগিয়ে এলেন স্থানীয় মাতব্বররা। তারা একটি কলসি নদীতে ভাসিয়ে দিলেন। বললেন, কলসিটি নদীর যে পাড়ে গিয়ে ভিড়বে চরের দখল পাবেন সেই পাড়ের লোকজন। কলসিটি নদীর পশ্চিম পাড়ে অর্থাৎ ভাওয়াল রাজার এলাকায় (বর্তমানে গাজীপুরের কাপাসিয়া) এসে ভিড়ে। তারপর থেকেই ধাঁধার চরটি পশ্চিমপাড়ের ভাওয়াল রাজা পরগনার (বর্তমানে গাজীপুরের কাপাসিয়া) দখলে। হিন্দু কৃষকরা ভাওয়ালের রাজাকে খাজনা দিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। ১৮১৬-১৮১৯ সালে ব্রিটিশ সরকার চরের জরিপ করে কৃষকদের বৈধ মালিকানা দেয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর হিন্দুরা চরের জমি বিক্রি করে ভারতে পাড়ি জমান। এখন পুরো চরের মালিকানা মুসলিম কৃষকদের হাতে।
এই চরের মাটি খুবই উর্বর। রোপণ করলে হয় না, এমন কোনো ফল-ফসল নেই। এক সময় চরে প্রচুর আখ হতো। এখন সবচেয়ে বেশি সবজি চাষাবাদ হয়। মাটি অতি ফলনশীল। সারবিহীন ফসল সুস্বাদু। ১৯৬০, ১৯৮৮, ১৯৯৮ সালের বন্যায় এ চরটি তলিয়ে গিয়েছিল। ১৯৬০ সালের বন্যার পর চরে কোমর পর্যন্ত পানি জমে যায়। ফলে মাটির উর্বরাশক্তি আরও বাড়তে থাকে।
২০০৬ সালের সার্ক সম্মেলনে ধাঁধার চরটিকে গ্রামীণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। তবে প্রকৃতির ভ্রমণপিয়াসী মানুষের কাছে ধাঁধার চর হয়ে উঠেছে অনেকটা সাচ্ছন্দময়। শীত এবং বর্ষা মৌসুম ছাড়াও ঈদে চরে বিপুল লোক সমাগম ঘটে। ভ্রমণপিপাসুরা দূরদূরান্ত থেকে জন্মদিন, পিকনিকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আনন্দ উপভোগ করতে চলে আসেন ধাঁধার চরে। এখানে রয়েছে একটি পরিচালনা কমিটি।
[caption id="attachment_1981" align="alignnone" width="828"] ছবিঃ সংগৃহীত[/caption]
ধাঁধার চর পরিচালনা পরিষদ কমিটির সভাপতি গোলাম মো. তৈমুরুজ্জামান জানান, পর্যটকদের জন্য চরে বিশুদ্ধ নলকূপের পানি, টয়লেট, রান্না ও বিশ্রামের ব্যবস্থা রয়েছে।
এদিকে এই চরটি পর্যটন করপোরেশনের আওতায় আনার দাবি জানান স্থানীয়া। তারা জানায়, শীতলক্ষ্যা ও ব্রহ্মপুত্র নদের মোহনায় সৃষ্ট এই ধাঁধার চরটি পর্যটন শিল্পে বিকাশ ঘটানো গেলে স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন ঘটবে।
অপরদিকে নরসিংদীর বাঁচাও শীতলক্ষ্যা আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহবুব সৈয়দ বলেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ধাঁধার চরটি কৃষি পর্যটন ও নদী পর্যটনের জন্য অনন্য একটি স্থান হবে। এখানকার প্রকৃতি-পরিবেশ ঠিক রেখে কৃষি ও নদী পর্যটন এবং প্রকৃতি পর্যবেক্ষণকেন্দ্র গড়ে তুললে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা এখানে আসতেন। পাশাপাশি এ অঞ্চলের উন্নয়নসহ বহু লোকের কর্মসংস্থানের পথও সৃষ্টি হতো। নদীটি দখলবাজদের হাত থেকেও অনেকটা রক্ষা পেত।
বিভাগ : নরসিংদীর খবর
- লুঙ্গি ও টাকা বিতরণ করে বললেন, মার্কাডা মনে আছেতো? আনারস!
- নরসিংদীতে তিন দপ্তর কর্তৃক বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও পরিবেশ দূষণ করেই চলছে খামার
- নরসিংদীতে তীব্র গরমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শাকসবজিসহ বিভিন্ন কৃষিফসল
- দেশকে এগিয়ে নিতে কৃষির সকল স্তরে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
- মাধবদীতে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ইসতিসকার নামাজ আদায়
- নরসিংদীর দুই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতিক বরাদ্দ
- পথচারিদের পাশে পানি ও স্যালাইন নিয়ে একদল যুবক
- পলাশে কিশোরী ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
- সাংবাদিকতার জন্য চমৎকার পরিবেশ তৈরি করতে চাই: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী
- পলাশ প্রেসক্লাবের সভাপতি-মনা, সম্পাদক-রনি
- লুঙ্গি ও টাকা বিতরণ করে বললেন, মার্কাডা মনে আছেতো? আনারস!
- নরসিংদীতে তিন দপ্তর কর্তৃক বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও পরিবেশ দূষণ করেই চলছে খামার
- নরসিংদীতে তীব্র গরমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শাকসবজিসহ বিভিন্ন কৃষিফসল
- দেশকে এগিয়ে নিতে কৃষির সকল স্তরে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
- মাধবদীতে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ইসতিসকার নামাজ আদায়
- নরসিংদীর দুই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতিক বরাদ্দ
- পথচারিদের পাশে পানি ও স্যালাইন নিয়ে একদল যুবক
- পলাশে কিশোরী ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
- সাংবাদিকতার জন্য চমৎকার পরিবেশ তৈরি করতে চাই: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী
- পলাশ প্রেসক্লাবের সভাপতি-মনা, সম্পাদক-রনি
এই বিভাগের আরও