পলাশে প্রবাসীর স্ত্রীর প্রতারনার ফাঁদে গৃহশিক্ষক

১৬ জুলাই ২০১৯, ০৭:৩৭ পিএম | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪১ পিএম


পলাশে প্রবাসীর স্ত্রীর প্রতারনার ফাঁদে গৃহশিক্ষক

পলাশ প্রতিনিধি ॥
নরসিংদীর পলাশে পারভীন আক্তার নামে ঋণগ্রস্ত এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঋণ গ্রহণের জামিনদার হতে গিয়ে উল্টো সাজানো মামলার আসামী হয়েছেন নুরুল ইসলাম এক গৃহশিক্ষক।
অভিযুক্ত পারভীন উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার গড়পাড়া মহল্লার প্রবাসী রহমত উল্লাহর স্ত্রী ও প্রতারণার শিকার ওই শিক্ষক পৌর এলাকার বালুচর পাড়া মহল্লার মৃত সোলেমান মিয়ার ছেলে।

ভুক্তভোগী গৃহ শিক্ষক নুরুল ইসলামের অভিযোগ, তিনি দীর্ঘবছর যাবত স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রাইভেট পড়িয়ে আসছেন। দুই বছর ধরে পারভীন আক্তারের স্কুল পড়ুয়া দুই মেয়েকে তাদের বাড়ি গিয়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন তিনি। এ সুবাদে পারভীন আক্তারের পরিবারের সদস্যদের সাথে তার সু-সম্পর্ক তৈরি হয়।
পারভীনের স্বামী রহমত উল্লাহ বিদেশ যাওয়ার সময় পারভীন আক্তার অনেক টাকা ঋণ গ্রহণ করে স্বামীকে বিদেশ পাঠায়। বিদেশে গিয়ে পারভীনের স্বামী ঠিকমত টাকা পয়সা পাঠাতে না পারায় বিদেশ যাওয়ার সময় করা ঋণের চাপে পড়েন পারভীন। এমন কী মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ ও সংসার চালাতে গিয়ে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েন। ওই সময় প্রায় সাত মাসের প্রাইভেট পড়ানোর টাকাও দিতে পারছিল না পারভীন আক্তার।


গত ১৪/৩/২০১৮ সালে পল্লী মঙ্গল কর্মসূচি নামক একটি এনজিও’র পলাশ শাখা থেকে ২ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করেন পারভীন আক্তার। ঋণ গ্রহণের সময় গৃহ শিক্ষক নূরুল ইসলামকে অনেক অনুরোধ করে জামিনদার বানানো হয়। এসময় নুরুল ইসলাম জামিনদার হিসেবে জনতা ব্যাংকের একটি খালি চেক জামানত হিসেবে ওই এনজিও কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে জামিনদার হওয়ার পর এনজিও’র ঋণের টাকা পরিশোধও করেন পারভীন।
এরই মধ্যে গৃহ শিক্ষক নুরুল ইসলাম চাকুরি পেলে প্রাইভেট পড়ানো বাদ দিয়ে খুলনায় চলে যান। গত ৬/২/২০১৯ তারিখে পারভীন আক্তার নুরুল ইসলামকে না জানিয়ে ঋণদাতা এনজিও (পল্লী মঙ্গল কর্মসূচি) থেকে নুরুল ইসলামের স্বাক্ষর করা জনতা ব্যাংকের খালি চেকটি তুলে নেয়। পরে ওই খালি চেকে ৬ লাখ টাকা লিখে জনতা ব্যাংক থেকে চেকটি ডিজঅনার করানো হয়। কোনো প্রকার লিগ্যাল নোটিশ না দিয়ে পারভীন আক্তার গত ১১/৭/২০১৯ইং নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নরসিংদী আদালতে একটি মামলা করেন।


মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, পল্লী মঙ্গল কর্মসূচি এনজিও থেকে ৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করছেন না নুরুল ইসলাম। পারভীন আক্তার এনজিওটির একজন সদস্য হওয়ার সুবাদে ঘোড়াশাল শাখার ব্যবস্থাপক নূরুজ্জামানের অনুমতিপত্রের ক্ষমতাবলে ওই মামলাটি করেছেন বলে জানান নুরুল ইসলাম।
নুরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আমি বিস্মিত হয়েছি, জামিনদার হয়ে উপকার করতে গিয়ে ঋণ না নিয়েও মামলার আসামী হয়েছি।


এ বিষয়ে পল্লী মঙ্গল কর্মসূচি ঘোড়াশাল শাখার ব্যবস্থাপক নূরুজ্জামান জানান, ২০১৮ সালে নূরুল ইসলামের জামিননামায় ও জনতা ব্যাংকের একটি খালি চেক পেয়ে পারভীন আক্তারকে ২ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল। ওই ঋণ পরিশোধ হওয়ার পর গত ৬/২/২০১৯ইং এ পারভীন আক্তার ওই চেকটি নিয়ে গেছেন। কিন্তু ওই চেক নিয়ে তিনি যে নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আমাদের এনজিও’র নাম ভাঙ্গিয়ে মামলা করবেন তা আমরা জানি না। বিষয়টি নিয়ে আমাদের পল্লী মঙ্গল কর্মসূচির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এ ব্যাপারে পারভীন আক্তারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন রান্নার কাজে ব্যস্ত আছি। এসব বিষয়ে পরে সরাসরি কথা বলবো, ফোনে বলা সম্ভব নয়।



এই বিভাগের আরও