রায়পুরায় প্রেমিকাকে ডেকে এনে গণধর্ষণ, প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ২

০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:৫৮ পিএম | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২০ এএম


রায়পুরায় প্রেমিকাকে ডেকে এনে গণধর্ষণ, প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ২

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
নরসিংদীর রায়পুরায় বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ডেকে নিয়ে এক গার্মেন্টস কর্মী (২১) প্রেমিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগে প্রেমিকসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নির্যাতিতা ওই নারী গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা ও গাজীপুরের একটি গার্মেন্টসের শ্রমিক।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে রায়পুরা উপজেলার গৌরিপুরা তালুককান্দি গ্রামের সূর্যের মোড় এলাকার একটি গ্যারেজে এ গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- নির্যাতিতার প্রেমিক, রায়পুরা উপজেলার বেগমাবাদ হুগলাকান্দি গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে শিপন মিয়া (২০) ও তার সহযোগী একই উপজেলার ঘাগটিয়া আলগী এলাকার হুছন উদ্দিনের ছেলে শামীম মিয়া (১৯)।
এ ঘটনায় অপর অভিযুক্ত একই উপজেলার বেগমাবাদ পল্টন এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত দুই আসামীকে আজ সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, স্বামী পরিত্যক্তা ও এক সন্তানের জননী গাজীপুরের ওই গার্মেন্টস কর্মীর সাথে দেড় বছর আগে রায়পুরার শিপন মিয়ার ফোনে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্কের জেরে শিপন তাকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে ফোন করে রায়পুরায় যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। শিপনের কথামত গতকাল রবিবার রাতে গাজীপুরের বোর্ড বাজার হতে রায়পুরায় যান ওই নারী। রায়পুরার নীলকুঠি বাসস্ট্যান্ডে নামার পর শিপন ও তার দুই সহযোগী শামীম এবং রুবেল ওই নারীকে রিসিভ করে।

পরে তারা সিএনজি অটোরিকশাযোগে কিছুক্ষণ যাওয়ার পর নেমে পায়ে হেটে গৌরিপুরা তালুককান্দি গ্রামের সূর্যের মোড় এলাকার একটি গ্যারেজে নিয়ে বসিয়ে রাখে। সেখানে বসানোর কারণ জানতে চাইলে তারা ওই নারীকে জানায় রাতের খাবার খাওয়ার পর বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে।
পরে তারা ওই নারীকে ভেতরে রেখে বাইরে থেকে গ্যারেজটি তালাবদ্ধ করে বাইরে বের হয়ে যায়। ৫/৭ মিনিট পর প্রেমিক শিপন পুণরায় ভেতরে ঢুকে একটি পাটি (মাদুর) পাতে। এসময় ওই নারী কথা বলতে চাইলে তাকে থাপ্পড় মারে শিপন। এসময় শিপন ওই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে শিপন তার সহযোগী শামীমকে ডেকে ভেতরে এনে সে বাইরে চলে যায়। পরে শামীম তাকে ধর্ষণ শেষে চলে গেলে আবারও শিপন ধর্ষণ করে। শেষে অপর সহযোগী রুবেলও ওই নারীকে ধর্ষণ করে। এসময় চিৎকার করার চেষ্টা করলে তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয় এবং কান্নাকাটি না করে সকালে চলে যাওয়ার জন্য বলে শিপন।


রাতের এক পর্যায়ে ওই নারী গ্যারেজ থেকে পালিয়ে বের হয়ে আসেন। পরে গ্রামের পাহাড়ায় নিয়োজিত স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে রাতেই থানায় জানানো হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দুই আসামীকে গ্রেফতার করে।
রায়পুরা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোজাফফর হোসেন বলেন, এ ঘটনায় নির্যাতিতা ওই নারী বাদী হয়ে তিনজনকে আসামী করে রায়পুরা থানায় মামলা করেছেন। নির্যাতিতা ওই নারীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত দুই আসামী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে, তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অপর এক আসামী পলাতক রয়েছে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।