রায়পুরার মরজালে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষে আহত ৯

১০ এপ্রিল ২০২০, ০৮:১২ পিএম | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০২ এএম


রায়পুরার মরজালে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষে আহত ৯

রায়পুরা প্রতিনিধি:
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজালে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একই পরিবারের ৬ জনসহ উভয় পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন। মরজাল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য সাইদুজ্জামান বাদল ও প্রতিবেশি আব্দুর রহিমের মধ্যে লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (০৯ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার মরজাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।


আহতরা হলেন, মরজাল গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের স্ত্রী হুসনেআরা (৮০), তার ছেলে মো. জুয়েল মিয়া (৪০), দুই মেয়ে সুরমা আক্তার (৩৫), গুলশান আরা (৩৩), বড় ছেলে সাইদুজ্জামান বাদলের পুত্র আশিকুজ্জামান তুষার (২৩) ও ভাগ্নে সিয়াম (১২)। এই ঘটনায় আব্দুর রহিম (৫৫), তার স্ত্রী হেলেনা (৪৮) ও ছেলে মো. শামীম (২৫) আহত হন।


এদিকে গুরুতর জখম হুসনেআরা, জুয়েল, আশিকুজ্জামান ও সিয়ামকে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আশিকুজ্জামানের মাথায় ও ঘাড়ে দুটি অস্ত্রোপাচার, সিয়ামের মাথায় অস্ত্রোপাচার শেষে আইসিওতে রাখা হয়েছে। দুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলেন জানান স্বজনরা। আশিকুজ্জামান নরসিংদী সরকারি কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের ও সিয়াম বারৈচা আইডিয়াল স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র। বাকি দুইজন নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন।
অপরদিকে আহত রহিম, হেলেনা ও শামীমকে তার স্বজনরা রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে চিকিৎসক রহিম ও শামীকে ঢাকায় পাঠায় এবং হেলেনাকে চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়।


পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাবেক মরজাল ইউপি সদস্য সাইদুজ্জামান বাদলের সঙ্গে প্রতিবেশি আব্দুর রহিমারে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। সাম্প্রতিক বাদল ওই জমির একটি কাঁঠালগাছ এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন। বিক্রিকৃত গাছ কর্তন করতে আসা লোকজনকে বাঁধা দেয় প্রতিপক্ষ রহিম। এনিয়ে দুইপক্ষের মধ্যেই কথা কাটাকাটি হয়। পরে জমির সীমানা নির্ধারণের জন্য ডাকা হয় সার্ভেয়ার। জমিমাপা শেষে সার্ভেয়ার জানান গাছটি বাদলের জমির। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার বিকালে রহিম ও তার লোকজন জুয়েলকে ডেকে নিয়ে বাড়ির পাশে কুপিয়ে আহত করে। এসময় জুয়েলকে বাঁচাতে এগিয়ে আসা হুসনেআরা, সুরমা, গুলশান, আশিকুজ্জামান ও সিয়ামকেও এলোপাতারি কুপিয়ে জখম করে রহিম ও তার লোকজন। এ সময় আহত হন রহিম, তার স্ত্রী হেলেনা ও ছেলে শামীমও।


পরে বাদলের বাড়ির ভাড়াটিয়া আহত ছয়জনকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর জখম হুসনেআরা, জুয়েল, আশিকুজ্জামান ও সিয়ামকে ঢাকা পাঠান এবং বাকি দুইজনকে চিকিৎসা দেয়া হয়। অপদিকে আহত আব্দুর রহিম, হেলানা ও শামীমকে তার স্বজনরা রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রহিম ও শামীমকে ঢাকায় পাঠানো হয় এবং হেলেনা চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে যান।


এই ঘটনায় পর শুক্রবার (১০ এপ্রিল০ বিকালে সাইদুজ্জামান বাদল বাদী হয়ে আব্দুর রহিম তার স্ত্রী ও ছেলেসহ অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জনের বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।


এ ব্যাপারে গুলশান আরা বলেন, আব্দুর রহিম তার লোকজন নিয়ে পরিকল্পিতভাবে নিয়ে আমার ভাই জুয়েলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে প্রথমে দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে জুয়েলকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে আমাকেসহ আমার মা, বোন, বড় ভাই ও বোনের ছেলেকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে।
তিনি আরো বলেন, ভাতিজা আশিকুজ্জমান ও ভাগ্নে সিয়াম ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিওতে আছেন।

এদিকে আব্দুর রহিমারে বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার পর পরিবারের বাকি সদস্যরা গা ঢাকা নিয়েছে বলে জানান তার প্রতিবেশিরা।


এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



এই বিভাগের আরও