বন্ধ হচ্ছে যত্রতত্র এলপি গ্যাস বিক্রি

২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:৩১ পিএম | আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪, ০৭:৩৫ পিএম


বন্ধ হচ্ছে যত্রতত্র এলপি গ্যাস বিক্রি
সংগৃহিত ছবি

টাইমস ডেস্ক:

যত্রতত্র তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজির বিক্রি বন্ধ করে দিতে যাচ্ছে সরকার। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ বলে জানা গেছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, গত বছর ৮১টি এলপিজি দুর্ঘটনায় অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এলপিজির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনটি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এক. যেখানে সেখানে এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। দুই. যত্রতত্র এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হচ্ছে। তিন. বিস্ফোরক পরিদফতরের ভিজিল্যান্স বাড়ানো হচ্ছে।

সূত্র বলছে, দেশে দিন দিন এলপিজির চাহিদা বাড়ছে। সাধারণ মানুষ খুব সহজেই এটি পেতে চাইছেন। সহজ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে এটি যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে। দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বদলে এটি আরও বাড়ছে। কিন্তু এলপিজি বিক্রির ক্ষেত্রে যেসব নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত তার একটিও কোথাও মানা হচ্ছে না।

বিস্ফোরক পরিদফতরের একজন কর্মকর্তা বলেন, এলপিজি বাতাসের চেয়ে ভারী। এজন্য এটি বাতাসের সঙ্গে উড়ে না গিয়ে আবদ্ধ জায়গাতে জমা হয়। কোনও কারণে স্পার্ক করলে বা আগুনের সংস্পর্শে আসলেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কোথাও এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে তাপের কারণে সিলিন্ডারের বাল্ব খুলে গিয়ে গ্যাস বেরিয়ে ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে। এজন্য এলপিজি বিক্রি থেকে ব্যবহার প্রতিটি পর্যায়ে সতর্ক থাকতে হয়। যা অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয় না।

এলপিজি হচ্ছে পেট্রোলিয়াম উপজাত প্রপেন ও বিউটেনের সংমিশ্রণ। এটি ১০-১৫ বার চাপ দিয়ে তরল গ্যাসে রূপান্তর করা হয়। সাধারণ তাপমাত্রায় এটি গ্যাসীয় পদার্থে পরিণত হয়। সাধারণ তাপমাত্রার তুলনায় বেশি তাপমাত্রা এলপিজি বোতলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এজন্য অনেক সময় রাস্তার ওপর খোলা আকাশের নিজে এলপিজি বোতল রেখে বিক্রি করা ঝুঁকিপূর্ণ। আবার অনেক সময় সাইকেলের দুপাশে বেঁধে এলপিজি সিলিন্ডার বিতরণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এভাবে পরিবহনকালে কোনও যান্ত্রিক যানের ধাক্কা লাগলেও সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।

জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, কীভাবে এলপিজি বিক্রি করতে হবে তার একটি পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতিতে বলা হয়েছে, কীভাবে সেগুলো রাখতে হবে। কোথায় রাখতে হবে। সাধারণত বড় বড় দোকানে এসব মেনে চললেও এখন গ্রাম-গঞ্জে হাটে বাজারে উন্মুক্ত অবস্থায় যেখানে সেখানে এলপিজি বিক্রি হচ্ছে। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করেই নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে যাচ্ছে।

জ্বালানি বিভাগের অতি সম্প্রতি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছি। আশা করছি অবিলম্বে তা কার্যকর হবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি সচিব আনিছুর রহমান বলেন, সম্প্রতি মুন্সীগঞ্জে একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। আরও জায়গায় ঘটতে পারে। এখন এলপিজির ব্যবহার বেড়েছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। এখন তো আমাদের যেকোনও জায়গায় দোকান দিয়ে সেখানে ১০টা সিলিন্ডার রাখার অনুমতি দেই। কিন্তু এটি আসলে কতখানি নিরাপদ আর সেই দোকানদার আসলে কতখানি সচেতন সেটা বলা কঠিন। তাই আমরা যেখানে সেখানে সিলিন্ডার বিক্রি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি।

বিস্ফোরক পরিদফতরের মহাপরিচালক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, এলপিজি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা নানা সতর্কতা করা সব সময় বলি। এখন বিক্রির ক্ষেত্রে যদি মন্ত্রণালয় থেকে কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয় তাহলে তা আমরা বাস্তবায়ন করবো।

সূত্র: সঞ্চিতা সীতু, বাংলা ট্রিবিউন


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও