সিগারেটে করহার এবং স্তরসংখ্যা অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব, লাভবান হবে তামাক কোম্পানি
১৩ জুন ২০১৯, ০৬:৩৪ পিএম | আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৪৫ এএম

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্নস্তরে সিগারেটের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে শলাকা প্রতি মাত্র ২০ পয়সা বা ৫.৭ শতাংশ। অথচ এসময়ে জনগণের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১১.৩২ শতাংশ। সিগারেট ধূমপায়ীর প্রায় ৭২ শতাংশই নিম্নস্তরের সিগারেটের ভোক্তা। প্রস্তাবিত বাজেট কার্যকর হলে এই স্তরের সিগারেটের প্রকৃতমূল্য হ্রাস পাবে এবং ব্যবহার বাড়বে। অপরদিকে, বাজেট প্রস্তাবনায় মূল্যস্তরভেদে সিগারেট কোম্পানিগুলোকে ৩১ শতাংশ পর্যন্ত আয় বৃদ্ধির সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। বিড়ির শলাকা প্রতি ৬ পয়সা দাম বৃদ্ধি এর ব্যবহার কমাতে কোনো ভূমিকাই পালন করবেনা। তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু এবং অসুস্থতার বোঝা মাথায় নিয়ে তামাক কোম্পানিগুলোকে লাভবান করার এই বাজেট প্রস্তাবনা চরম হতাশাজনক এবং একইসাথে জনস্বাস্থ্যবিরোধী।
প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্নস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম মাত্র ২ টাকা বৃদ্ধি করে ৩৭ টাকা নির্ধারণ এবং সম্পূরক শুল্ক ৫৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যা খুবই হতাশাজনক। এরফলে প্রতি শলাকা সিগারেটের দাম বৃদ্ধি পাবে মাত্র ২০ পয়সা। সিগারেট ধূমপায়ীর প্রায় ৭২ শতাংশই এই নিম্নস্তরের সিগারেটের ভোক্তা। জনগণের মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিলে নিম্নস্তরের সিগারেটের এই অতি সামান্য মুল্য বৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতার কোনো পরিবর্তন হবেনা এবং একই সাথে ধূমপান শুরু করতে পারে এমন তরুণ প্রজন্মকে ধূমপানে নিরুৎসাহিত করা যাবেনা। প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যম, উচ্চ এবং প্রিমিয়াম স্তরে সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ৬৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রেখে শুধুমাত্র মূল্য পরিবর্তনের মাধ্যমে ১০ শলাকা সিগারেটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৬৩ টাকা, ৯৩ টাকা এবং ১২৩ টাকা। সরকারের এই পদক্ষেপে বিগত বছরের তুলনায় মূল্যস্তরভেদে তামাক কোম্পানিগুলোর আয় ৩১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। ফলে, বিশেষত বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো এবারের বাজেটে ব্যাপকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এভাবে তামাক কোম্পানিগুলোকে ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ দিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ কখনই সম্ভব নয়। তামাকবিরোধীদের দীর্ঘদিনের দাবি সিগারেটের স্তরসংখ্যা হ্রাস ও সুনির্দিষ্ট কর পদ্ধতি প্রচলনের কোনো নির্দেশনা এবারের বাজেট ঘোষণাতেও নেই। স্তরসংখ্যা অপরিবর্তিত রাখায় ভোক্তার সিগারেট স্তর পরিবর্তনের সুযোগ থেকে যাবে।
জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিড়ির ব্যবহার বন্ধে একাধিকবার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা পূর্ববর্তী বাজেটের আগে দেয়া হয়েছিল, যার প্রতিফলন আগেও দেখা যায়নি এবং এবছরের বাজেট ঘোষণাতেও নেই। বিগত ১ মাস ধরে বিড়ি কারখানার মালিক পক্ষের উদ্যোগে কর না বাড়ানোর জন্য যে নজিরবিহীন আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে তাতে জনস্বাস্থ্যের পরিবর্তে বাজেট ঘোষণায় তাদেরকেই অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির মূল্য দুই বছর পর মাত্র ১.৫ টাকা বৃদ্ধি করে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই বৃদ্ধি খুবই নগণ্য এবং এরফলে প্রতি শলাকা বিড়ির দাম বাড়বে মাত্র ৬ পয়সা। বিড়ির প্রধান ভোক্তা নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষ। দরিদ্র মানুষের উপর এই সামান্য মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়বেনা। বিড়ির সম্পূরক শুল্ক বিগত তিন বছর অপরিবর্তিত রাখার পর ৩০% থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫% নির্ধারণ করা হয়েছে। এরফলে বিড়ি থেকে সরকারের রাজস্ব আয় কিছুটা বৃদ্ধি পাবে।
ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যে করারোপের ক্ষেত্রে প্রচলিত ট্যারিফ ভ্যালু প্রথা বাতিলের জন্য তামাকবিরোধী আন্দোলনকারীদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৩০ টাকা এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে সম্পূরক শুল্ক হবে ৫০%। ওজনের উপর ভিত্তি করে জর্দা ও গুলের মূল্য নির্ধারণ করার ফলে এসব পণ্য থেকে কর আদায়ের জটিলতা কিছুটা হলেও সহজ হবে এবং আদায়কৃত করের পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ তামাক ব্যবহারকারী জনগোষ্ঠিকে জর্দা-গুল ব্যবহারের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষার ক্ষেত্রে মাননীয় অর্থমন্ত্রীর এই প্রয়াস নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
অপ্রক্রিয়াজাত তামাকের বিদ্যমান ১০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক তুলে দেয়ার পাশপাপাশি প্রক্রিয়াজাত তামাকপণ্য রপ্তানি উৎসাহিত করতে শূন্য শতাংশ রপ্তানি শুল্ক প্রস্তাবিত বাজেটেও অব্যাহত রাখা হয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং চরম জনস্বাস্থ্যবিরোধী পদক্ষেপ। বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো এখন বাংলাদেশকে তাদের উৎপাদন ভূমি হিসেবে ব্যবহার করায় তামাক চাষ বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। সুতরাং এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশে তামাক ও তামাকজাত পণ্যের উৎপাদনকেই মূলত উৎসাহিত করা হবে।
অন্যান্য কর প্রস্তাবগুলোর মধ্যে, সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল তামাক কোম্পানিগুলোর বিদ্যমান ৪৫ শতাংশ করপোরেট কর বহাল রাখার পাশাপাশি সকল প্রকার তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী করদাতার ব্যবসায় থেকে অর্জিত আয়ের উপর বিদ্যমান ২.৫% সারচার্জ বহাল রাখা হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে একটি শক্তিশালী তামাক শুল্ক-নীতি গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করলেও উক্ত নির্দেশনার কোনো প্রতিফলন প্রস্তাবিত বাজেটে নেই, যা সার্বিকভাবে তামাকবিরোধীদের জন্য হতাশাজনক।
বিভাগ : অর্থনীতি
- নরসিংদী- ৪: স্বতন্ত্র লড়বেন মনোহরদী উপজেলা চেয়ারম্যান বীরু
- রায়পুরায় চোর সন্দেহে গরুর ক্রেতাকে পিটিয়ে হত্যা, আহত ৪
- ডাল্টন জহির পুণরায় ‘বাংলাদেশ ট্যুরিজম ডেভলপারস এসোসিয়েশন’র পরিচালক নির্বাচিত
- আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের ধারাবাহিক সাফল্য, ৯৫.৩৫ জিপিএ- ৫
- রায়পুরা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন
- শেরে বাংলা গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড পেলেন রাজীব মণি দাস
- নরসিংদীর ৫টি সংসদীয় আসন থেকে আ.লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন যারা
- পানি ব্যবস্থাপনায় কার্যকর মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরী: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
- শিবপুরে আনন্দ মিছিলে গিয়ে আওয়ামীলীগ নেতার মৃত্যু
- নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় নরসিংদীতে আনন্দ মিছিল
- নরসিংদী- ৪: স্বতন্ত্র লড়বেন মনোহরদী উপজেলা চেয়ারম্যান বীরু
- রায়পুরায় চোর সন্দেহে গরুর ক্রেতাকে পিটিয়ে হত্যা, আহত ৪
- ডাল্টন জহির পুণরায় ‘বাংলাদেশ ট্যুরিজম ডেভলপারস এসোসিয়েশন’র পরিচালক নির্বাচিত
- আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের ধারাবাহিক সাফল্য, ৯৫.৩৫ জিপিএ- ৫
- রায়পুরা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন
- শেরে বাংলা গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড পেলেন রাজীব মণি দাস
- নরসিংদীর ৫টি সংসদীয় আসন থেকে আ.লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন যারা
- পানি ব্যবস্থাপনায় কার্যকর মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরী: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
- শিবপুরে আনন্দ মিছিলে গিয়ে আওয়ামীলীগ নেতার মৃত্যু
- নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় নরসিংদীতে আনন্দ মিছিল