এমএস বিলেট রপ্তানি বাড়িয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে কার্যকর অবদান রাখার পরামর্শ: শিল্পমন্ত্রী 

১৮ নভেম্বর ২০২০, ০৭:১১ পিএম | আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৭ পিএম


এমএস বিলেট রপ্তানি বাড়িয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে কার্যকর অবদান রাখার পরামর্শ: শিল্পমন্ত্রী 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রপ্তানিমুখী এমএস বিলেট (MS Billet) উৎপাদন এবং তা বিশ্ববাজারে রপ্তানি বাড়িয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে কার্যকর অবদান রাখার জন্য ইস্পাত শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন শিল্প শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি। তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় দেশিয় ইস্পাত শিল্পের উৎপাদন ক্ষমতা বেশি থাকলেও এটি পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। তিনি জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে বছর ব্যাপী এমএস বিলেট উৎপাদন এবং রপ্তানির নতুন বাজার খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দেন।

শিল্পমন্ত্রী আজ বুধবার (১৮ নভেম্বর) জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেড এর উদ্যোগে চীনে ২৫ হাজার মেট্রিক টন এমএস বিলেট রপ্তানির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এ আহবান জানান। ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মাহাবুবুল আলম, জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর কবির, জিপিএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমূল আলোচনায় অংশ নেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশ এখন এক উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তির নাম। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিগত এক যুগে শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, শিল্পপণ্য রপ্তানি, রেমিট্যান্স প্রবাহ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, অবকাঠামো উন্নয়ন, নিরবচ্ছিন্ন পরিসেবাসহ সকলখাতে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় শিল্পখাত অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। দেশের ধারাবাহিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির পেছনে রয়েছে শিল্পখাতের উল্লেখযোগ্য অবদান বলে তিনি উল্লেখ করেন।

করোনাকালীন বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিময়তার উদাহরণ টেনে শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, কোভিড মহামারীর মধ্যেও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫.২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যেখানে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জিডিপি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক। বেসরকারিখাতের শিল্প উদ্যোক্তারাই দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির নেপথ্যের নায়ক। তাদের মেধা, সৃজনশীল চিন্তা, নিরন্তর পরিশ্রম, সময়োপযোগী ও সাহসী সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের শিল্পখাত সাফল্যের পথ ধরে এগিয়ে চলেছে। স্বাধীনতার আগে বাঙালিদের কোনো ইস্পাত কারখানা না থাকলেও বর্তমানে দেশে প্রায় ৪০০টি ইস্পাত কারখানা গড়ে ওঠেছে। এসব কারখানা বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন। দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্পাত ব্যবহারের পরিমাণ ৭.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন।

হুমায়ূন বলেন, ইস্পাত শিল্পখাত বিকাশের পথে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করতে শিল্প মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এ শিল্পের কাঁচামাল সহজলভ্য করতে মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে জাহাজ ভাঙ্গা কার্যক্রমকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প জোন গড়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ আইন ২০১৮ পাস করে এর আওতায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প কারখানাগুলো পরিবেশবান্ধব করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব শিল্প-কারখানায় হংকং কনভেশন ২০০৯ অনুযায়ী ইয়ার্ড শিপ রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটি স্থাপন করা হচ্ছে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা উপকৃত হচ্ছেন এবং দেশেই ইস্পাত শিল্পের গুণগত মানসম্পন্ন কাঁচামাল সহজলভ্য হচ্ছে। স্ক্র্যাপ আমদানি এবং উৎপাদিত পণ্য রপ্তানিকালে দুইবার ফ্রেইট খরচসহ অন্যান্য শুল্ক বাধা অপসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সমর্থন থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।


বিভাগ : অর্থনীতি


এই বিভাগের আরও