চরাঞ্চলে বাড়ছে অনাবাদী কৃষি জমির পরিমাণ

১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৪৩ পিএম | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১১ পিএম


চরাঞ্চলে বাড়ছে অনাবাদী কৃষি জমির পরিমাণ
Agriculture


নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে প্রতি বছরই বাড়ছে অনাবাদী কৃষি জমির পরিমান। খরচের তুলনায় লাভ কম হওয়াসহ নানা কারনে ফসল আবাদ থেকে সরে যাচ্ছেন কৃষকরা। এতে পতিত পড়ে থাকছে শত শত হেক্টর কৃষি জমি। কৃষি কাজ না থাকায় বাধ্য হয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন অনেকে।


সরেজমিন চরাঞ্চল ঘুরে জানা গেছে, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষা ইউনিয়নজুড়ে রয়েছে ১৬ শত হেক্টর কৃষি জমি। এরমধ্যে ২ শত ৫০ হেক্টর জমি বিস্তীর্ন চরাঞ্চলে। মাটি উর্বর হওয়ায় চরাঞ্চলের এসব জমিতে ধান, মরিচ, আলু, বাদাম, তিল, ভুট্ট্রা, বাঙ্গি, ওস্তে, কুমড়াসহ বিভিন্ন ফসলের ভাল ফলন হয়।

কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সার, কীটনাশক, জ্বালানী তেলসহ কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারনে উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ কম হওয়ায় দিন দিন কৃষি ফসল আবাদ থেকে সরে যাচ্ছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। এতে পতিত পড়ে আছে এই চরাঞ্চলের আড়াইশত হেক্টর কৃষি জমি।

কৃষি কাজ ছেড়ে বিদেশ গমনের প্রবনতা বাড়ায় স্থানীয়ভাবে পাওয়া যাচ্ছে না কৃষি শ্রমিকও। পাওয়া গেলে মজুরি দিতে হচ্ছে বেশি। বাড়তি খরচ দিয়ে ফসল চাষ করে অব্যাহত লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।


লোকসানের কারনে চাষাবাদ না করায় একইভাবে নরসিংদী জেলার আরও ১১টি চরাঞ্চলীয় ইউনিয়ন বাশঁগাড়ী, মির্জারচর, পাড়াতলী, চাঁনপুর, আলোকবালী, করিমপুর, নজরপুর, শ্রীনগর, চর দীঘলদি, চর মধুয়া ও চর আড়ালিয়ায় প্রতি বছর বাড়ছে অনাবাদী কৃষি জমির পরিমান। এসব চরাঞ্চলের জমিতে চাষাবাদ না করায় পতিত জমির বাড়ছে।


রায়পুরা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক মোহর আলী বলেন, কৃষি কাজে খরচের তুলনায় লাভ কম হওয়ায় সবাই এখন বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এতে জমি পতিত পড়ে থাকছে, একজনকে অনুসরণ করে অন্যজনও জমি পতিত রাখায় মাঠ এখন গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হচ্ছে।


একই উপজেলার দড়িগাঁও গ্রামের মো: দুলা মিয়া বলেন, জ্বালানী তেল, সার, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম বেশি ও চাহিদা অনুযায়ী কৃষি শ্রমিক না পাওয়ায় শত শত বিঘা জমি পতিত পড়ে আছে।


অপর কৃষক রব মিয়া বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবসহ দীর্ঘদিন ধরে লোকসানের কারণে কৃষিকাজে এখন সবাই অনাগ্রহী। আমি চলতি বছর ১০ হাজার টাকা খরচ করে ওস্তে আবাদ করে বিক্রি করেছি মাত্র ৪ হাজার টাকা। এভাবে লোকসান দিতে দিতে কৃষি কাজের বিকল্প চিন্তা করছি।


নানা কারণে কৃষকদের ফসল আবাদ থেকে সরে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, জমি যাতে পতিত পড়ে না থাকে সেজন্য বিকল্প পদ্ধতির লাভজনক ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

এছাড়া সহজ শর্তে কৃষকদের ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে কৃষকরা চাষাবাদে আগ্রহী হবেন বলে মনে করনে তিনি।