মাধবদী পৌরসভার দুই ওয়ার্ডে শেষ হলো ২১ দিনের লকডাউন

০২ জুলাই ২০২০, ১০:০৮ পিএম | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৫ পিএম


মাধবদী পৌরসভার দুই ওয়ার্ডে শেষ হলো ২১ দিনের লকডাউন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভার দুই ওয়ার্ড এ শেষ হয়েছে ২১ দিনের লকডাউন। বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) মাধবদী পৌরসভার ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডকে (উত্তর বিরামপুর ও দক্ষিণ বিরামপুর) লকডাউন মুক্তকরণসহ এলাকাটিকে ইয়েলোজান ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন। মাধবদী পৌরসভায় অনুষ্ঠিত লকডাউনের মূল্যায়ন সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেয়া হয়।


এসময় নরসিংদী সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন ও মাধবদী পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন মানিকসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, নরসিংদীতে গত ৬ এপ্রিল থেকে শুরু হয় করোনা সংক্রমণ। এরপর থেকে আশংকাজনক হারে বাড়তে থাকে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা। করোনা শনাক্তের সংখ্যার দিক থেকে অধিক ঝুকিপূর্ণ বা রেডজোন এলাকা চিহ্নিত করে ১১ জুন মধ্যরাত রাত থেকে মাধবদী পৌরসভার ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডে লকডাউন ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন। প্রথম দফায় ১৪ দিন ও দ্বিতীয় দফায় আরও ৭দিন বাড়িয়ে একুশ দিনের পরীক্ষামূলক লকডাউন কার্যকর করা হয়। এতে কমে আসে নতুন করে করোনা সংক্রমণ, সুস্থ হয়ে উঠেন আক্রান্তরাও। পরীক্ষামূলক এই লকডাউনের সফলতা দেখছেন এলাকাবাসী ও স্থানীয় প্রশাসন।
লকডাউনের শেষ দিন বৃহস্পতিবার মাধবদী পৌরসভার ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসকসহ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এসময় করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠা লোকজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেন জেলা প্রশাসক এবং তাদের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।

এসময় নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন জানান, দুটি ওয়ার্ড এলাকায় ১৮ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করে পরীক্ষামূলক লকডাউন শুরু করা হয়। লকডাউনের সময়টাতে নতুন করে তেমন বাড়েনি সংক্রমণের হার, সুস্থ হয়ে উঠেছেন আক্রান্তরাও। এলাকাটিতে বর্তমানে আক্রান্ত তিনজনকেও আগামী রবিবার সুস্থ ঘোষণা করা হলে এলাকাটি গ্রীণজোনে উন্নীত হবে।

নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন জানান, সংক্রমণ কমে আসায় পরীক্ষামূলক এই লকডাউনকে সফল বলে মনে করছি। এলাকাটিকে ইয়েলোজোন ঘোষণা করা হয়েছে এবং আগামী রবিবার গ্রীণজজোন ঘোষণা করা যাবে বলে আশাবাদী।
তিনি জানান, লকডাউন ঘোষণার পর থেকে সচেতনতা বাড়াতে নজরদারি বৃদ্ধি, নাগরিকদের খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে প্রশাসন। পরবর্তীতে করোনা সংক্রান্ত কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলার অধিকতর আক্রান্ত অন্যান্য এলাকাকে রেডজোন ঘোষণা করা হবে এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মাধবদী পৌরসভার ৪ ও ৫নং ওয়ার্ডকে গত ১১ জুন মধ্যরাত থেকে লকডাউন করে জেলা প্রশাসন। প্রথম দিকে ১৮ জন করোনা রোগী নিয়ে লকডাউন করলেও পরবর্তীতে সেখানে আরো ৫ জন আক্রান্ত হয়। লকডাউনের ২১দিন পর সেখানে মোট আক্রান্ত ২৩ জনের মধ্যে ২০ জন সুস্থ্য হওয়ায় ওয়ার্ড দুইটিকে ইয়েলো জোন হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।