পাইকারচরে তালবীজ রোপন কর্মসূচীতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা

২৯ অক্টোবর ২০১৯, ০১:১৩ এএম | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০৭ এএম


পাইকারচরে তালবীজ রোপন কর্মসূচীতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদী সদর উপজেলার পাইকারচর ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কের পাশে প্রতিবছরই তালবীজ রোপন ও বৃক্ষরোপন করছে শিক্ষার্থীরা। নাইমুল ইসলাম ভূঁইয়া নামে স্থানীয় এক বেসরকারি চাকুরিজীবীর উদ্যোগে “সবুজ ঘাসের গল্প” নামে এই বৃক্ষরোপন কর্মসূচীতে উদ্ধুদ্ধ হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ কর্মসূচীর মাধ্যমে বজ্রপাত রোধে প্রায় ৫ হাজার তালবীজ ও শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপন করা হয়েছে। এ মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয় পাইকারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানসহ স্থানীয়রাও সহযোগিতা করছেন।


ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছুটির দিন ব্যতীত সবার নিজ নিজ জীবীকা নিয়ে ব্যস্ততা, গাছ লাগানোর জায়গার অভাবসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাকে মাথায় রেখে বজ্রপাত থেকে মৃত্যু ঠেকাতে তালবীজ ও বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর উদ্যোগ নেয়া হয়। এর অন্যতম উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন নরসিংদী সদর উপজেলার পাইকারচর ইউনিয়নের কন্দ্রপদী গ্রামের ইদ্রিস আলী ভূঁইয়ার ছেলে ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের কর্মকর্তা নাইমুল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি প্রতি বছরই নিজ উদ্যোগে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করেন পাকা তাল। শিক্ষার্থীরা বাড়িতে পাকা তাল খাওয়া শেষে তালবীজ নিয়ে আসেন বিদ্যালয়ে। পরে শিক্ষক শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা একযোগে ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কের পাশে রোপন করেন এসব তালবীজ। রোপন করা হয় অন্যান্য প্রজাতির গাছও। প্রতিবছর এ কর্মসূচীর মাধমে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের বৃক্ষরোপনের প্রতি আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে।


উদ্যোক্তা নাইমুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আজকাল যে হারে গাছ ধ্বংস করে প্রকৃতিকে হুমকির সম্মুখীন করা হচ্ছে সে তুলনায় গাছ রোপন করা হয় না। বিশেষ করে বজ্রপাত থেকে বাঁচতে তালগাছের বিকল্প নেই। কিন্তু তালগাছ ব্যক্তিগতভাবে কেউ রোপন করেন না। শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে বৃক্ষরোপন করানো হলে তারা ভবিষ্যতেও গাছ লাগানোর প্রতি আগ্রহী থাকবে।
তিনি বলেন, “সবুজ ঘাসের গল্প” নামের বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর মাধমে ২০১৬ সালে ৪ শত ৫০টি তালবীজ ২০১৭ সালে ১ হাজার, ২০১৮ সালে ১ হাজার ৫শত এবং ২০১৯ সালে ২ হাজার তালবীজ রোপন করা হয়েছে। আর এতে ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে।


স্থানীয় বালাপুর নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল সবুর বলেন, বৃক্ষরোপন কর্মসূচীতে ফলে ছাত্রছাত্রীদের সম্পৃক্ত করার ফলে তাদের মধ্যেও গাছ লাগানোর প্রতি আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। গত ৪ বছর ধরে এলাকার বিভিন্ন সড়কে তালবীজসহ অন্যান্য গাছ রোপনে অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা।


পাইকারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাশেম তালবীজসহ বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর প্রশংসা করে বলেন, ২০১৬ সাল থেকে তাদের এই বৃক্ষরোপন কর্মসূচী অব্যাহত আছে। বিশেষ করে আমার ইউনিয়ন এলাকার ৫/৬টি গ্রামের সড়কের পাশে তালবীজ রোপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে বজ্রপাত ঠেকাতে এসব তালগাছ ভূমিকা পালন করবে এবং অন্যান্য গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবে। আমি নিজেও তাদের কর্মসূচীগুলোতে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করি।



এই বিভাগের আরও