শহর সংক্রান্ত

১৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৭:০১ এএম | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪, ০৮:২৩ পিএম


শহর সংক্রান্ত
ফাহিম ইবনে সারওয়ার বাম পা রিকশার শহর থেকে আসা একজন মানুষ বাসের শহরে চাপা পড়েনা। কারণ ঢাকার বাইরে থেকে আসা এক বাস কনডাক্টর প্রথম দিনই তাকে শিখিয়ে দেয়, ‘বাম পা আগে’। ০৪.১২.২০১৬ হেলিকপ্টার রেস বিকেলবেলার জ্যামে রিকশায় বসে ছিলাম পান্থপথে। শব্দ শুনে আকাশে তাকায় দেখি দুইটা হেলিকপ্টার রেস লাগাইছে! ০৩.১২.২০১৬ লেট নাইট রাত বাড়লে ঢাকার ব্যস্ততা কমে। বাড়ে কারওয়ান বাজারের ব্যস্ততা। সবজি ভর্তি ট্রাকগুলো শহরে ঢোকে আর খবরের কাগজগুলো প্রেস থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে। রাত আড়াইটার গাড়ির অপেক্ষায় রাতের শেষ সিগারেটটা ধরান নাইট শিফটের সাব এডিটর। ওদিকে লেট নাইটের খবরটা পড়ে মেকআপ তোলার সময় পাননি সংবাদ পাঠিকা। ভাড়া বাড়ির গেট বন্ধ হয়ে গেছে রাত ১১ টায়। সাংবাদিক বলে কিছুটা ছাড় পাওয়া যায়, গাড়িতে উঠে সংবাদ পাঠিকা তখনো ভেবে চলছেন উচ্চারণ কোনোটা ভুল হয়নি তো! অথচ ওই রাতে সংবাদের দর্শক ছিল সব ইনসমনিয়ার রোগী, ওরা শুধু স্ক্রিনজুড়ে ভেড়া চড়িয়েছে। রাতের পালার দারোয়ান সিসিটিভি ক্যামেরার নিচেই খুব আরামে ঘুমিয়ে আছে। আগুন, ভূমিকম্প আর রোড এক্সিডেন্ট ছাড়া বড় কোন দূর্ঘটনা রাতে ঘটেনা। রিপোর্টারের গাড়ি তাই ঢাকা মেডিকেলে ঢুঁ মেরে ছুটছে চানখারপুলের দিকে। নিউজ এডিটর ৩টার খবরের রানডাউনটা ছেড়ে ‘মুভি’ ফোল্ডারে একটা সিনেমা খুঁজছেন সময় কাটানোর জন্য। কারওয়ান বাজারে তখন সবজি টানার ঝুড়িতেই ঘুমিয়ে গেছে দিনমজুর। প্রথম সংবাদ পাঠের উত্তেজনায় সারা রাত যে সংবাদ পাঠিকা ঘুমাতে পারেননি তাকে পিক করতে নাইট ডিউটির একজন ড্রাইভার ঘুম ঘুম চোখে স্টিয়ারিংয়ে হাত রাখে। মূল সড়ক ধরে জোরে ছুটতে থাকে নিউজ চ্যানেলের টমটম গাড়ি। ওদিকে কলাবাগানে এসে কেবল থামলো রাঙামাটির বাসটা। পাহাড়ের পবিত্রতা গায়ে মেখে স্ক্যানিয়া বাসের যাত্রীদের আজকে আবার অফিস করতে হবে! ১৮.১১.২০১৬ বেতন বিকেল ৫টার পরপর যে লোকটা ছাতা হাতে কারওয়ান বাজার থেকে বাজার করে সোনারগাঁ হোটেলের উল্টো দিকে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকে, ওই লোকটার বেতন কত জানতে ইচ্ছা করে। ১৫.১১.২০১৬ প্রেম চোখাচোখির এই শহরে সানগ্লাসের সাথে প্রেম! ১৪.১১.২০১৬ শীতের সন্ধ্যা শীতটা একটু একটু পড়তে শুরু করেছে। ভাপা মিঠার মত মিষ্টি আর গরম হয়ে উঠছে সন্ধ্যাগুলো। স্টেডিয়ামে মানুষের লাইন।  কেউ গ্যালারিতে গোল হয়ে গান শোনে, কেউ ক্রিকেটে বুদ। আমি স্টেডিয়ামে যাইনা, গান শুনিনা, খেলা দেখিনা। আমি শুধু অফিসে যাই, অফিস থেকে বাসায় ফিরি। মাঝে মাঝে নীলক্ষেত-শাহবাগ যাই, বই-ম্যাগাজিন কিনতে। শহরের উত্তরে জলপাইপাড়ার স্টেডিয়ামটার মত বাংলাবাজারও এখন বেশ সরগরম। নতুন নতুন বইয়ের প্রচ্ছদ আসছে, পেজ মেকআপ আর প্রুফ কাটা নিয়ে তুমুল ব্যস্ততা। প্রেসের লোকগুলো পিঁপড়ার মত পরিশ্রমী। ফেব্রুয়ারি চলে এসেছে প্রায়, আর সময় নেই। এই সময়ে হোটেল রাজ্জাকের কথা মানুষের কম মনে পড়ে, ওটা তুলে রাখা হয়েছে সেহরীর জন্য। এই শীতে টাকা জমাতে হবে, ফেব্রুয়ারিতে হাতে বাড়তি টাকা থাকেনা। দিন দুয়েকটা কম হলেও ফেব্রুয়ারি তো সেই আরেকটা ছাপোষা বেতনভূক্ত মাস। ১০.১১.২০১৬ টকশোতে প্রজাপতি বিকেলবেলা টিভি খুলেই দেখি একটা হলুদ প্রজাপতি টিভির মধ্যে বসে আছে। প্রজাপতিটা কত বড়, সেটা মেপে বলা যাবেনা। ১৪ ইঞ্চি স্ক্রিনে প্রজাপতিটাকে ছোট লাগে আবার ৪২ ইঞ্চি স্ক্রিনে বড় লাগে। তাঁর দাবি আসাদ গেটের বিলবোর্ডে তাঁর একটা ১৪০০ স্কয়ারফিটের ফ্ল্যাট ছিল, সেখান থেকে তাঁকে বিনা নোটিশে উচ্ছেদ করা হয়েছে। ওই ফ্ল্যাটের বারান্দায় বসে জ্যাম দেখতে তাঁর খুব ভালো লাগতো। এখন সে জাপান গার্ডেন সিটিতে একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকে! টকশোতে আসা হলুদ প্রজাপতিটা বলছিলো, অবৈধ বিলবোর্ডে থাকার চেয়ে শরীফ ছাতার নিচে থাকা অনেক ভালো। প্রজাপতিটা বলছিলো, বিজ্ঞাপন বিরতির পর আর দেখা হবে না, তাঁর নাকি আরেকটা টকশোতের যেতে হবে আবাসন বিষয়ে কথা বলার জন্য! ৩১.১০.২০১৬ হলুদ ওভারব্রিজ আজকে বুয়েটের ভিতরে দেখলাম একটা হলুদ ওভারব্রিজ। আমিতো ওভারব্রিজটার প্রেমে পড়ে গেছি! ০৪.০৯.২০১৬ রাত ১১টার পর গেইট বন্ধ এই শহরে ট্যাঙ্কির পানি থেকে কলাপসিবল গেটের তালা সবই যেন খুব তাড়াতাড়ি শেষ বা সময় মেনে বন্ধ হয়ে যায়। এপ্রিলের গরম সকালে শরীরটা ঠিকমত না ভিজিয়েই যদি অফিসের দিকে ছুটতে হয়, তাহলে না মন ভালো থাকে না শরীর! এই রাজধানী আবার ঘুমায়ও খুব দ্রুত। রাজধানীর স্বভাব সাধারণত না ঘুমানো। কিন্তু কলাপসিবল গেটগুলো জোর করে রাত ১১টার মধ্যেই যেন সবাইকে ঘুম পাড়িয়ে দিতে চায়। শহরের সবচেয়ে বেশি যে সাইনবোর্ড চোখে পড়বে সেটি হলো,‘রাত ১১টার পর গেইট বন্ধ’। যেন রাত ১১টার পর থেকেই কারফিউ শুরু হয়ে যায় শহরে। অনেকে ভাড়াটিয়াদের কাছে বাড়তি চাবি দিয়ে রাখেন, আবার অনেকেই দেন না। এই যে এত বড় শহর, কোটি কোটি মানুষকে চুম্বকের মত ধরে রেখেছে যে শহর, তার সবকিছুই কি তাহলে সীমিত? না, রাস্তায় মানুষ অগণিত, একবার জ্যাম লাগলে সেটা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য, রাস্তার খোঁড়াখুড়ি আর বর্ষায় পানি জমে দূর্ভোগ নিয়মিত। ০৩.০৫.২০১৬ হলুদের মহামারী মেয়েটার হাতে হলুদ রঙের নোকিয়া ফোনটা দেখে ছেলেটার মনে হল, ফিনল্যান্ডে চাষ করা চন্দ্রমল্লিকা! ওই বিদেশি চন্দ্রমল্লিকা  ছেলেটার মাথা খেয়ে ফেলে আর শহরে দেখা দেয় জন্ডিসের মহামারী। ট্যাক্সিক্যাব তো আগে থেকেই হলুদ ছিল, সানগ্লাস, চায়ের কাপ, জেব্রা ক্রসিংটাও হলুদ হতে শুরু করে। পোস্ট অফিস থেকে কেনা খামটা তো জন্ম থেকেই হলুদ ছিল, কিন্তু কয়েকদিন আগে সাত তলা বিল্ডিংয়ের মাথায় শিংয়ের মত যে বিলবোর্ডটা গজিয়েছে ওটাও আচমকা হলুদ হয়ে যায়। উজ্জ্বল রংয়ের কসম খেয়ে জন্ডিস থেকে বাঁচার জন্য ট্রাফিক কনস্টেবল মাথার উপর উঁচু করে ধরে রাখেন একটা হলুদ ছাতা। আর এইসব কথার মানে না বুঝে আনকোরা ড্রাইভারটা হলুদ সিগন্যালকে গ্রীন সিগন্যাল ভেবে ছুটতে গিয়ে চোখে সর্ষেফুল দেখলো! ০১.১০.২০১৬ বড় মফস্বল ঈদের সময় ঢাকা হয়ে যায় এতিম আর মফস্বলগুলো হয়ে ওঠে ঢাকা। নির্দ্বিধায় তখন ঢাকাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মফস্বল বলা যায়! সরকারি বেসরকারি প্রেম ভালোবাসার বদৌলতেই মনে হয় এত মানুষের চাপেও ঢাকা শহরটা বেঁচে আছে। ঢাকা শহরের ভালোবাসারা কেমন? এরা কি প্রকৃতভাবে ভালোবাসতে জানে? ভার্সিটির থার্ড ইয়ারে পড়া মেয়েটা মাসে কয়বার নিউমার্কেটে যায়? মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারের ছেলেটা কি নীলক্ষেত থেকে শুধু বিসিএস এর বই কেনে? ওদের ভালোবাসা কোন ধরণের? সরকারি না বেসরকারি? ওদেরও কি চাকরিটা সত্যি সত্যি পেয়ে যাওয়ার অপেক্ষা? ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা বছরে বড় বন্ধ তেমন মেলে না। দুটো ঈদের বন্ধ আর যদি কিছু ঐচ্ছিক ছুটি পাওয়া যায়। বাড়ি যাওয়াটা কেমন? লঞ্চে করে বরিশাল? মধ্যরাতে মাঝ নদীতে যখন লঞ্চ দোলে তখন মৃত্যু ভয়টা ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে। ডাক নাম একটু একটু করে মফস্বলের মানুষেরা ঢাকা শহরে নিজেদের পরিচয় তৈরি করে। তারা লেখে, গায়, চাকরি করে, বেতন পায়। মানুষের সাথে মেশে। কীভাবে তাদের পরিচয়গুলো তৈরি হয়? ভালো নাম আর ডাক নামের মধ্যে কোনটা বেছে নেয় তারা? দেখাদেখি ডাকাডাকি ঠিকানা মুখস্থ থাকলেও কারো কারো সঙ্গে দেখা হয় না। আবার ঠিকানা জানা না থাকলেও রাস্তায় রাস্তায় বারবার দেখা হয়ে যাওয়া মানুষও আছে। কেউ কেউ দেখেও দেখে না।  আবার কেউ কেউ না দেখা পর্যন্ত ডাকতেই থাকে। কেউ শুধু একটা দোকানেই বারবার যায়, কারো পুরো মার্কেট ঘুরেও কিছু পছন্দ হয় না। ২৫.০৬.২০১৬ নিহত পথচারী আমার বুকসেলফে এসে জমা হয় একটা পুরোনো বিল। জামা বানাতে দিয়েছিলাম, পরে আর আনা হয়নি। একটা বিদেশি পাখি ঘুমের মধ্যে কতুকুতু দেয়। আমি ওকে সাবধান করে দেই, এটা বাংলাদেশ। কারো মাথায় হাগলে ঢিলা খাবি! ঢাকা শহর ছাড়ার সিদ্ধান্তটা একরকম চূড়ান্ত করে ফেলি। নীলক্ষেতের সস্তা বইয়ের লোভ ছাড়তে পারি না। ছুটি কাটিয়ে শহরটা চাঙ্গা হয়ে উঠছে, কারওয়ান বাজারে রাস্তা পার হতে গিয়ে এক পথচারী নিহত। ২৪.০৯.২০১৬ শৈত্যপ্রবাহ ঢাকা শহরে কখনো পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয় না। তবু রাস্তায় পানি জমে। গাড়ির কার্বোরেটরে পানি ঢুকলেও মানুষগুলোর চুলে বর্ষার পানি লাগে না, বৃষ্টির বাতাস গায়ে লাগলে গাড়ির গ্লাস তুলে এসিটা ছেড়ে দেয় তারা। ঢাকার মানুষ শীতে কম কাঁপে, ভূমিকম্প তাদের কাঁপায় বেশি। তবুও মাঝে মাঝে কি শৈত্যপ্রবাহ টের পাওয়া যায় না? কারওয়ান বাজারের ফুটপাতে যারা ঘুমায় তারা তো টের পায়। সিগন্যাল তোমার লাল টিপকে ট্র্যাফিক সিগন্যাল ভেবে সবগুলো গাড়ি থেমে গেলো। আর সেই সুযোগে আমি রাস্তা পার হলাম। জেব্রা ক্রসিং অথবা ওভারব্রিজ ছাড়াই! ০১.১২.২০১৬ ভেন্টিলেটর ও আকাশের কালার ব্যাচেলররা ছয়তলায় ভাড়া থাকলে বাথরুমের ভেন্টিলটরের কাঁচ লাগাইতে হয় না। সেই ভেন্টিলেটরটারে তখন ব্যাচেলরদের কাছে জানলার মত মনে হয়। যেখান থেকে তারা সবাইরে দেখতে পারে কিন্তু তাদেরকে কেউ দেখেনা। জানলার ফাঁক দিয়া তাকাইলেই গজ কাপড়ের মত নীল আসমান দেখা যায়। আসমানের নিচে হাউজিং অ্যাপার্টমেন্টের আটসাঁট বারান্দা। নায়িকাদের শরীরের সাথে যেমন জামা লাইগা থাকে তেমনি হাইরাইজ বিল্ডিংগুলার সাথে বারান্দাগুলা লাইগা থাকে। সেইসব বারান্দায় ময়লা কাপড় চোপড় ধোয়ার পরে শুকানো হয়। মফস্বলের মানুষেরা তাদের একতলা বাড়ির ছাদটারেও ঘরের মত ব্যবহার করে, কাপড় শুকায়, আচার রোদে দেয়, হলুদ-মরিচ শুকায়, বর্ষাকালে বালতি দিয়া বৃষ্টির পানি ধরে। ঢাকা শহরের মানুষ ছাদের ব্যবহার জানেনা, এইখানে সবাই ভাড়াটিয়া, ছাদের জন্য কারো মায়া নাই! ব্যাচেলর বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়া চাইলে দেখা যায় আসমানটা ধানমন্ডি ছাড়ায় গেছে। ধানমন্ডির আকাশ একমাত্র থার্টি ফার্স্ট নাইটে কিলিয়ার বুঝা যায়। ওই রাতে অনেক পটকা ফুটে, বুঝা যায় ওই এলাকার মানুষের অনেক টাকা তাই তারা ঘণ্টাব্যাপী পটকা ফাটায়া কয়, ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’। ভেন্টিলেটর দিয়া পাশের শাদা বাড়ির ছাদ দেখা যায়। বড়লোকের বাড়ি, বুঝাই যায়, কোন ভাড়াটিয়া নাই, তিন তলা বাড়ির ছাদে কাজের লোকেরা থাকে। ব্যাচেলরদের বাথরুমের ভেন্টিলেটরে কাঁচ বা পর্দা না থাকলেও হারপিকের  নীল রংয়ের বোতলগুলা থাকে,গাঢ় নীল বোতলের ফাঁক দিয়া চাইলে সেম কালারের একটু লাইট শেডের আসমান দেখা যায়! সেই আসমান দিয়া দিনের বেলায় এনার্জি সেভারের মত আলো আসে, বাথরুমের লাইট জ্বালানো লাগে না। ১৮.১০.২০১৬ চাষের প্রজাপতি শহরে এবার প্রজাপতির চাষ ভালো হয়েছে। ০২.১২.২০১৬ পিঁয়াজ মানব প্রতিদিন সকাল ৯টা-সোয়া ৯টার দিকে একজন লোক পিঁয়াজ কাটে। গত এক মাস ধরে দেখছি। শুক্রাবাদে হোটেলে নাস্তা করে মেট্রো শপিংমলের লাগোয়া ওভারব্রিজটায় উঠলেই আমি লোকটাকে দেখি। একই জায়গায় একটা প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে একই ভঙ্গিতে লোকটা প্রতিদিন পিঁয়াজ কাটে। ডান হাতে একটা কালো হয়ে যাওয়া ছুরি, বা হাতে লাল-গোলাপী ইন্ডিয়ান পিঁয়াজ। নিচে মাটিতে একটা পাতিল রাখা সেখানে আরো পিঁয়াজ। ওই লোকটার পিঁয়াজ কাটার টাইম আর আমার অফিস যাওয়ার টাইম এক! আমি প্রতিদিন লোকটাকে খেয়াল করি, উনি আমাকে খেয়াল করেন না! ০৭.০২.২০১৭ বধির কাক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণের শব্দে একটা কাক বধির হয়ে গিয়েছিল। ১২.০২.২০১৭ সুবোধ আগে ছিল আইজুদ্দিন, এখন সুবোধ। ০৫.০৬.২০১৭ যুক্তি তক্কো গপ্পো এই রকম রাতের বেলা হঠ্যাৎ যদি কারওয়ান বাজারে জীবনানন্দ, ঋত্বিক ঘটক আর মান্টোর দেখা হয়ে যায় তাহলে তারা কি নিয়ে কথা বলবে? কবিতা? নাটক? সিনেমা? নাকি গল্প? ঋত্বিক কি কথায় কথায় গাল পাড়বে? মান্টো কি আড্ডা দিতে দিতে গলা ভিজিয়ে নেবে? জীবনানন্দ কি ভদ্রলোকের মত চুপচাপ বসে থাকবে? তাঁদের আলোচনায় কি দেশভাগের কথা আসবে? ২০.০৭.২০১৭ লন্ডন অফিস ফেরা বিকেলে বৃষ্টি নামলে রিকশাওয়ালারা উদাস হয়ে যায়। তারা কোথাও যেতে চায় না। কেউ হুড তুলে রিকশায় বসে মোবাইলে গান শোনে। কেউ রিকশা পার্ক করে টং দোকানে চা খায়। অফিস ফেরত যাত্রীরা নানা জায়গার অফার দেয় ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, উত্তরা, বনানী, গুলশান। রিকশাওয়ালা আজকে কোথাও যাবে না। ভরা বর্ষণ তার মনকে উদাস করে দিয়েছে। ত্যক্ত বিরক্ত কর্মজীবি যাত্রী ক্ষেপে গিয়ে বলে, 'তাইলে যাবি কই? লন্ডন??' ২৩.০৭.২০১৭


এই বিভাগের আরও