২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৫২৪ জন নিহত: বার্ষিক প্রতিবেদন

২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৫:৫৫ পিএম | আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৩ পিএম


২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৫২৪ জন নিহত: বার্ষিক প্রতিবেদন
ফাইল ছবি

টাইমস ডেস্ক:

দেশে  ২০২৩ সালে ৬ হাজার ৯১১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৫২৪ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১১ হাজার ৪০৭ জন। নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি, যা প্রায় ১৭ শতাংশ। এসব সড়ক দুর্ঘটনার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ছিল ঢাকায়।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ২০২৩ সালের সড়ক দুর্ঘটনার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

সংগঠনটি দেশের ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসাব অনুযায়ী, দেশে গত বছর সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬ হাজার ৯১১টি। এতে ৬ হাজার ৫২৪ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৫৩২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৪৮৭ জন। যা মোট নিহতের ৩৮ শতাংশ। এছাড়া প্রায় দেড় হাজার পথচারী নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪১ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে আঞ্চলিক সড়কগুলোতে।

এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১১ হাজার ৪০৭ জন। মোট নিহতের ১৭ শতাংশের বেশি শিশু। গত বছর দেশে দুর্ঘটনার সংখ্যা ২০২২ সালের তুলনায় বাড়লেও কমেছে মৃত্যুর সংখ্যা। দুর্ঘটনায় শিশুমৃত্যুর সংখ্যাও আগের বছরের তুলনায় সামান্য কমেছে বলে উল্লেখ করা হয়।

এসময় আরও জানানো হয়, গত বছর ১০৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৪৮ জন নিহত এবং ৭২ জন আহত হয়েছেন। আর ২৮৭ টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩১৮ জন নিহত এবং ২৯৬ জন আহত হয়েছেন। সারা দেশের ৮২ শতাংশ রেল ক্রসিং অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ বলেও জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় সারাদেশে ১ হাজার ১২৮ শিশু নিহত হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন তিনজনের বেশি শিশুর প্রাণ গেছে সড়কে। দেশের আঞ্চলিক সড়কগুলোয় গত বছর সবচেয়ে বেশি শিশু মারা গেছে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসার সময়, বসতবাড়ির আশপাশের সড়কে খেলাধুলার সময় নিহতের ঘটনা বেশি ঘটেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০ শতাংশের বেশি শিশু মারা গেছে যাত্রী বা পণ্যবাহী বাস, ট্রাক ও প্রাইভেটকারের ধাক্কায়। এরপর আঞ্চলিক বা গ্রামীণ সড়কের যানবাহন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ১৬ শতাংশ শিশুর প্রাণ গেছে বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায়। স্থানীয়ভাবে তৈরি নছিমন, ভটভটি বা মাহিন্দ্র কেড়েছে প্রায় ৭ শতাংশ শিশুর প্রাণ।

রোড সেফটির প্রতিবেদনে দেখা যায়, গ্রামীণ সড়কে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে শিশু মৃত্যু কমেছে। বেড়েছে আঞ্চলিক সড়কে। দুর্ঘটনায় নিহত শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪৩ শতাংশেরই বয়স ৬ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। এরপরই আছে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশু। নিহত শিশুদের মধ্যে ৩৭ শতাংশ এই বয়সী।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন উপস্থাপন করে এসব তথ্য জানান রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এবং কানাডা রিসার্চ ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও