সবাই সপরিবারে নির্ভয়ে করোনা ভ্যাকসিন নিন: প্রধানমন্ত্রী

১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:০৬ পিএম | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩৬ পিএম


সবাই সপরিবারে নির্ভয়ে করোনা ভ্যাকসিন নিন: প্রধানমন্ত্রী
বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে নির্ভয়ে করোনার ভ্যাকসিন নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের মানুষকে করোনা মহামারি থেকে মুক্ত রাখতে ত্বরিত গতিতে টিকা আনা হয়েছে। সবাই সপরিবারে টিকা নিন। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪১তম জাতীয় সমাবেশ ২০২১-এর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পদকপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমরা করোনাভাইরাস মোকাবিলা করছি। আনসার-ভিডিপির প্রত্যেকটা সদস্যকে অনুরোধ করবো প্রতিটি মানুষ যেন এই করোনার টিকা নেয় তার জন্য কাজ করবেন। আমরা ইতোমধ্যে টিকা দেওয়া শুরু করেছি। অনেকে ভয় পায়, সুঁই ফোটাতে ভয় পায় এরকম কিছু কিছু মানুষও আছে। কিন্তু তারা যাতে রোগাক্রান্ত না হয় সেজন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলার পাশাপাশি টিকাটাও যাতে তারা নেয় সময় মতো, সেই ব্যবস্থাটা আমরা করেছি। সে ব্যাপারে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের সহযোগিতাও চাই।

সরকারপ্রধান বলেন, টিকা নিতে নিবন্ধনের জন্য ইতোমধ্যে ডিজিটাল সেন্টার করা হয়েছে। সেই ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে সবাই নিবন্ধন করতে পারবেন। সবাই নিজে এবং পরিবারের সব সদস্যসহ যেন টিকা নেয় সেদিকে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আনসার সদস্যরা গ্রামের মানুষকে একটু উদ্বুদ্ধ করবেন। এই মহামারি, যেটা আজ সারা বিশ্বব্যাপী দেখা দিয়েছে তার হাত থেকে অন্তত বাংলাদেশের মানুষ যেন মুক্তি পায়। তার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আপনারা টিক নিন। আপনারা সুরক্ষিত থাকুন। টিকা নিয়ে নিজেকে আরও সুরক্ষা দেন। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আনসার-ভিডিপি সব সময় যেকোনও কাজে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। যেমন, অগ্নি সন্ত্রাস। বিএনপি-জামায়াত জোট অগ্নি সন্ত্রাসে জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করছিল। রেলের ওপর আগুন ধরানো অথবা রেললাইন সরিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ হত্যা করার মতো অমানবিক কাজে বিএনপি-জামায়াত জোট সম্পৃক্ত ছিল। সেসব জায়গায় এবং সারা বাংলাদেশে মানুষের জানমাল রক্ষায় আনসার বাহিনীকে আমরা সম্পৃক্ত করেছিলাম। তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেই সময় অগ্নি সন্ত্রাস মোকাবিলা করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০২০ সাল থেকে ২০২১। ২০২০ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, ২০২১ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করছি। সঙ্গে সঙ্গে সুবর্ণজয়ন্তীতে পদার্পণ করেছি। মুজিববর্ষের উদ্দীপন, আনসার-ভিডিপি আছে সারাক্ষণ। এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আনসার ভিডিপি তারা বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। আনসার ভিডিপি সদস্যরা বাল্যবিবাহ রোধ করা, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে ভূমিকা রেখেছে। আমাদের দেশের যুবসমাজ যেন মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়, এ ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা আপনারা রেখে যাচ্ছেন এবং আরও রাখা প্রয়োজন। এর জন্য তথ্য প্রামাণ্যচিত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজ আপনাদের করতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা বিপথে না যায় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

আনসার-ভিডিপির কল্যাণে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, আনসার-ভিডিপির সুযোগ-সুবিধা, কল্যাণের দিকটা সব সময় আমাদের নজরে আছে। আনসার-ভিডিপি যে মানুষের সেবায় কাজ করে তার জন্য পদক দেওয়া বা সম্মান দেওয়া সেটা আমরাই প্রথম চালু করি। তারই স্বীকৃতিস্বরূপ সেবা ও সাহসিকতা পদক সেটা আমরা প্রবর্তন করি।

আনসার-ভিডিপি’র নতুন পোশাকের ডিজাইন তিনি নিজেই পছন্দ করে দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি বাহিনীর নিজস্ব পোশাক আছে। কাজেই আমরা সেই পাকিস্তান আমলের খাকি পোশাক বা আনসার বাহিনীর বিভিন্ন সময়ে যে পরিবর্তন এসেছে সেগুলো বাদ দিয়ে এখন নতুন ‘সেরেমনিয়াল’বা উৎসব পোশাক এবং কমব্যাট পোশাক প্রদান করেছি। অন্যান্য বাহিনীরও কমব্যাট পোশাক আছে। কাজেই আনসার বাহিনী বাদ থাকবে কেন? আর আজকের এই পোশাকের রঙ এবং ডিজাইন আমি নিজেই পছন্দ করে দিয়েছি। আশা করি আপনাদের সবার পছন্দ হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা-শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবন পাবে। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর আলোকিত হবে। বাংলাদেশের মানুষ উন্নত নাগরিক সুবিধা পাবে, উন্নত জীবন পাবে, সুন্দরভাবে বাঁচবে। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ, সেটাই আমরা করতে চাই।


বিভাগ : বাংলাদেশ