সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২১-এর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

১৫ জুলাই ২০২১, ০৯:০২ পিএম | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৭ পিএম


সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২১-এর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২১-এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকালে ঢাকা সেনানিবাসের মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্ষদের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের পদোন্নতির লক্ষ্যে ছয় দিনব্যাপী (১৫ থেকে ২০ জুলাই) এ পর্ষদের মাধ্যমে কর্নেল থেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল থেকে কর্নেল পদবিতে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এ পর্ষদের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর ভবিষ্যৎ জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য যোগ্য ও দক্ষ অফিসাররা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে পদোন্নতি পাবেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের এই মহতী বছরে অনুষ্ঠিত সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২১ একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত যে সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন তা আজ আর স্বপ্ন নয় বরং একটি বাস্তবতা। দেশ আজ উন্নয়নের সব সূচকে সম্মানজনক একটি অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বর্তমান সরকার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী এবং পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে।’

বর্তমান সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন এবং সশস্ত্র বাহিনীতে নারীর ক্ষমতায়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার একান্ত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের নিবিড় পরিচর্যায় এ বাহিনী আজ দেশে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অত্যন্ত পেশাদার এবং দক্ষ একটি বাহিনী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের যেকোনো দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। সেইসাথে দেশের সার্বিক অগ্রযাত্রায় সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশেষ ভূমিকা রাখছে।’

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা, আধুনিকতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দেশে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এই বাহিনীর ভাবমূর্তি যাতে বজায় রাখতে পারে সেই লক্ষ্যে যোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করতে উপদেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি পদোন্নতির ক্ষেত্রে অফিসারদের পেশাগত দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা, আনুগত্য, শৃঙ্খলার মান ও নেতৃত্বের গুণাবলি এবং সর্বোপরি নিযুক্তিগত উপযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। যোগ্য নেতৃত্বের অধীনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের যেকোনো প্রয়োজনে সব সময়ের মতো জনগণের পাশে এসে দাঁড়াবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

চলমান কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্মুখসারীর যোদ্ধা হিসেবে যে ভূমিকা পালন করছে তার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী এবং এই আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সেনাবাহিনীর পদোন্নতি পর্ষদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সরাসরি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শেষাংশে প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর উপস্থিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদাভাবে মতবিনিময় ও কুশলবিনিময় করেন।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও