অস্বাভাবিক খরচ বাড়ায় হজযাত্রী নিবন্ধনে সাড়া কম

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:৪৬ পিএম | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০০ পিএম


অস্বাভাবিক খরচ বাড়ায় হজযাত্রী নিবন্ধনে সাড়া কম

টাইমস ডেস্ক:
চলতি বছর অস্বাভাবিক খরচ বৃদ্ধির কারণে হজযাত্রী নিবন্ধনে সাড়া মিলছে সামান্যই। হজ প্যাকেজের বিপুল মূল্যবৃদ্ধি, ৫৭ হাজার টাকা মাথাপিছু বিমানভাড়া বৃদ্ধি এবং কঠিন শর্তের বেড়াজালের কারণে প্রি-রেজিস্ট্রেশন করেও আর্থিক সংগতিতে কুলিয়ে উঠতে না পেরে চূড়ান্ত নিবন্ধন থেকে সরে যাচ্ছেন হজ গমনেচ্ছুরা।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি হজ নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর গত ১৫ দিনে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার জন্য মোটে ১৩ হাজার ৫৪২ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পড়েছে ৭১৫টি হজ এজেন্ট।

এই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার হজ নিবন্ধন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ধর্ম মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টা পর্যন্ত বাড়িয়েছে। ঐ সময়ের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন করতে পারবেন।

সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। তবে নিবন্ধনের এই গতিহীনতা ও অনীহার কারণে শেষ অবধি হজযাত্রীর কোটা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা করছেন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। এজন্য হজযাত্রীদের বিমানভাড়া কমানোসহ প্যাকেজমূল্য পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে ট্র্যাভেল এজেন্সিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্র্যাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব)। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন তারা।

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ইউক্রেন যুদ্ধ ও নানাবিধ সংকটের কারণে আর্থিক চাপে আছেন হজযাত্রীরা। তারা করোনার আগে যারা হজে যাওয়ার আশায় প্রাক-নিবন্ধন করেছিলেন তাদের বাজেটে টান পড়েছে। তারা যে বাজেটে হজে যাওয়ার টার্গেট করে রেখেছিলেন তার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে এবারের হজ প্যাকেজ ও বিমানভাড়া। ২০১৯ সালের তুলনায় এই ২০২৩ সালে হজের মাথাপিছু ব্যয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। সৌদি আরব হজের খরচ না বাড়ালেও টাকার সঙ্গে ডলার ও রিয়ালের বিনিময় হার বেড়েছে। এর চাপ এসে পড়েছে প্যাকেজে। তবে প্রধানমন্ত্রী যদি বিমানভাড়া কমানোর ব্যবস্থা নেন, তাহলে সংগতিহীন হজযাত্রীদের জন্য হজ করার পথ সুগম হতে পারে। হজযাত্রীরা অনেক উপকৃত হবেন এবং তার জন্য দোয়া করবেন। তাই আমি হাবের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব তিনি যেন বিমান ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। হাজিদের অর্থকষ্ট লাঘবে বিশেষভাবে আবেদন করছি।

আটাব সভাপতি এস এন মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, সারা বিশ্বে আর্থিক মন্দার কারণে যে ডলার-সংকট বিরাজ করছে তার প্রভাবে হজযাত্রীদের আর্থিক চাপ আরো বৃদ্ধি পাবে এবং ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি হজে যাওয়ার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলবেন। বিমানভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারিত করা হলে হজযাত্রীদের আর্থিক ও মানসিক চাপ অনেকটাই কমবে।

একজন বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিক বলেন, এবছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ৭১৫টি হজ এজেন্টের মাধ্যমে হজে যেতে পারবেন ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন। আমরা প্রচণ্ড রকম হতাশ। হজে যাওয়ার জন্য আমার এজেন্সির মাধ্যমে ২৫৫ জন প্রাক-নিবন্ধিত হজযাত্রী রয়েছেন। কিন্তু গত ১৫ দিনে মাত্র এক জন নিবন্ধনের জন্য ২ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। হজ খরচ অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে হজযাত্রীরা টাকা দিতে পারছেন না। তারা এখন ওমরায় যেতে চাচ্ছেন। এ বছর আমার এজেন্সি থেকে ৫৫ জন হাজিও পাব কি না, সন্দেহ। গতকাল পর্যন্ত ১৫ দিনে মোট নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬ হাজার ২৪২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনা ৭ হাজার ৩০০ জন।

সূত্রঃ ইত্তেফাক


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও