করোনাকালে সাড়ে ৩ লাখ পোশাক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন
২৪ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:১১ পিএম | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৪ এএম
অর্থনীতি ডেস্ক:
গত বছর করোনা মহামারিতে তৈরি পোশাক খাতে চাকরি হারিয়েছেন ৩ লাখ ৫৭ হাজার শ্রমিক। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, চাহিদা কমে যাওয়ায় কারখানাগুলোতে শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। এমনকি অনেক কারখানা বন্ধও হয়ে গেছে।
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রকল্প ম্যাপড ইন বাংলাদেশ’র (এমআইবি) সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ৫০ শতাংশের বেশি কারখানায় শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে। গতকাল শনিবার ‘কোভিড মহামারির বিবেচনায় আরএমজি খাতে ক্ষতি, ক্ষমতা এবং পুনরুদ্ধার: মাঠ জরিপ থেকে প্রাপ্ত ফলাফল’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সভায় সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এসব কথা জানান। এমআইবি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক সৈয়দ হাসিবুদ্দিন হুসেন সভাটি পরিচালনা করেছেন।
সংকট এতোটাই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে যে, মাত্র ৪৪ শতাংশ কারখানা ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ছয় মাসের অর্ডার নিশ্চিত করতে পেরেছে বলে জানা গেছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৫৬ শতাংশ কারখানা বিভিন্ন স্তরে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে এবং ১১ শতাংশ কারখানা অনেক বেশি অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে।
এমআইবি’র তিন হাজার ২১১টি নথিভুক্ত কারখানার মধ্যে ৬১০টি কারখানা নিয়ে জরিপ চালানো হয়। এর মধ্যে ৫৪ শতাংশ আকারে ছোট, ৪০ শতাংশ মাঝারি ও ছয় দশমিক সাত শতাংশ বড়।
প্রাথমিক জরিপটি ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের চারটি বৃহৎ শিল্প এলাকায় গত অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে পরিচালিত হয়েছিল।
জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় ২৫ লাখ ৬২ হাজার ৩৮৩ কর্মীর মধ্যে প্রায় তিন লাখ ৫৭ হাজার ৪৫০ জনের মতো চাকরি হারিয়েছেন। যা মোট শ্রমিকের প্রায় ১৪ শতাংশ।
সিপিডি জানায়, কর্মী ছাঁটাই ও কারখানা বন্ধের ক্ষেত্রে বেশিরভাগই নিয়ম মানেনি। মাত্র তিন দশমিক ছয় শতাংশ কারখানা ক্ষতিপূরণের নীতি মেনেছে। তারা বেতন ও ক্ষতিপূরণ দিয়েছে এবং বকেয়া পরিশোধ করেছে। প্রায় ৭০ শতাংশ কারখানা বেতন দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত কারখানাগুলোতে ও বড় কারখানার ক্ষেত্রেই নিয়মের লঙ্ঘন অনেক বেশি। ৫৮ দশমিক সাত শতাংশ কারখানায় নতুন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অর্ডার বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে কারখানার সক্ষমতাও বেড়েছে।
মহামারির কারণে অনেক কারখানার আকার ছোট হয়ে গেছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে একটি কারখানায় শ্রমিকের গড় সংখ্যা ছিল ৮৮৬। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তা ৭৯০ জনে নেমে এসেছে। অর্থাৎ প্রায় ১০ দশমিক আট শতাংশ কমেছে শ্রমিকের সংখ্যা।
ভার্চুয়াল সংলাপে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিপিডি চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান জানান, বর্তমান ব্যবসায়িক মডেলের অধীনে বেশিরভাগ দায় সরবরাহকারী দেশকে নিতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ক্রেতা দেশগুলো ঝুঁকিমুক্ত ছিল। তিনি পোশাক খাতে একটি সাধারণ বীমা কর্মসূচি চালুর পরামর্শ দেন। সরকার, ক্রেতা, দাতা সংস্থা ও কর্মীদের ওই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জানান, কোভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরে পোশাক খাতটি যে মুহূর্তে একটু উঠে দাঁড়াচ্ছিল, তখনই দ্বিতীয় তরঙ্গের সংক্রমণ শুরু হয়।
প্রথম তরঙ্গের সময় ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ রিটেইল আউটলেটই বন্ধ ছিল। দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় বন্ধ ছিল প্রায় ২৫ শতাংশ।
অন্যদিকে সুতা ও তুলার মতো কাঁচামালের দাম বাড়লেও তৈরি পোশাক আইটেমের দাম বাড়েনি। বরং এটি প্রায় ১৫ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
সভায় বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম জানান, স্থানীয় সরবরাহকারীরা কেবল দামের কাটতি না, ক্রেতাদের কাছ থেকে ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ও পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘অর্ডার আসতে থাকায় আমরা আবার শ্রমিক নিয়োগ দিতে শুরু করেছি। আমরা আবার শ্রমিকের সংকটে ভুগছি। ৮০ শতাংশ কারখানা লোকসানে চলছে। বেঁচে থাকার জন্য তারা কোনোমতে ব্যবসা রেখেছে ও চালাচ্ছে।
বাংলাদেশ নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) ৪২০ সদস্য প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ঋণ নিয়েছিল। আরও ৯৯টির মতো আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু ঋণ পাওয়া যায়নি।
সিপিডি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, যেসব কারখানায় নতুন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের বেশিরভাগই আগে ছাঁটাইকৃত কর্মী। নতুন করে নিয়োগ দেওয়ার সময় তাদের আরও কম বেতন ও সুযোগ-সুবিধার দিয়ে চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছে। শ্রমিকরা চাকরি পেলেও আগের চাকরি চলে যাওয়ার কারণে তারা উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধাবঞ্চিত হয়েছে। (সূত্র: The Daily Star)
বিভাগ : অর্থনীতি
- শিবপুরে ক্যান্সার রোগীদের মাঝে আর্থিক অনুদান বিতরণ
- নরসিংদীতে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদযাপন
- নরসিংদীতে মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন
- সরকারি রাস্তাকে পুকুরের পাড় বানিয়ে খনন, ভেঙে পড়ার আশঙ্কা
- ঘোড়াশালে বাজার উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের দাবিতে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
- বেলাবোতে নিখোঁজের পর অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার
- বেলাবতে স্কুলছাত্র অনয় হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
- তামাক সেবন বন্ধে করারোপ অন্যতম কার্যকর পদ্ধতি তবে একমাত্র পদ্ধতি নয়
- নরসিংদীতে ট্রেনে কাটাপরে একজন নিহত
- মনোহরদীতে যুবকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
- শিবপুরে ক্যান্সার রোগীদের মাঝে আর্থিক অনুদান বিতরণ
- নরসিংদীতে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদযাপন
- নরসিংদীতে মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন
- সরকারি রাস্তাকে পুকুরের পাড় বানিয়ে খনন, ভেঙে পড়ার আশঙ্কা
- ঘোড়াশালে বাজার উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের দাবিতে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
- বেলাবোতে নিখোঁজের পর অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার
- বেলাবতে স্কুলছাত্র অনয় হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
- তামাক সেবন বন্ধে করারোপ অন্যতম কার্যকর পদ্ধতি তবে একমাত্র পদ্ধতি নয়
- নরসিংদীতে ট্রেনে কাটাপরে একজন নিহত
- মনোহরদীতে যুবকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার