ওয়ারি-বটেশ্বরে ৬ বছরেও শেষ হয়নি ”গঙ্গাঋদ্ধি” জাদুঘরের নির্মাণ কাজ

১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৬:১০ পিএম | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম


ওয়ারি-বটেশ্বরে ৬ বছরেও শেষ হয়নি ”গঙ্গাঋদ্ধি” জাদুঘরের নির্মাণ কাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদীতে নানা জটিলতায় থমকে আছে প্রত্নস্থান ওয়ারি-বটেশ্বরের “গঙ্গাঋদ্ধি” জাদুঘরের নির্মাণ কাজ। ৫ দফা মেয়াদ বৃদ্ধির পরও দুই বছরের কাজ শেষ হয়নি দীর্ঘ ৬ বছরেও। এতে বিমুখ হয়ে ফিরছেন দেশের বিভিন্ন জেলা হতে প্রত্নস্থানে আসা দর্শনার্থীরা। সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত জমিতে নির্মাণাধীন এ জাদুঘরের ভবিষ্যত ব্যবস্থাপনা নিয়ে সংকটের কারণে সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান জেলা পরিষদ।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৩০ সালের দিকে স্থানীয় স্কুল শিক্ষক হানিফ পাঠান লেখালেখির মাধ্যমে প্রত্নস্থান ওয়ারি-বটেশ্বরকে সুধী সমাজের গোচরে আনেন। প্রয়াত হানিফ পাঠানের পরে তাঁর ছেলে হাবিবুল্লাহ পাঠানের সংগ্রহ করা অনেক প্রত্নবস্তু রয়েছে পরিবারটির ব্যক্তিগত পাঠাগারে। ২০০০ সালে ঐতিহ্য অন্বেষণ নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এখানে শুরু করে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ। ধারাবাহিক খনন কাজে এখানে পাওয়া গেছে, প্রাচীন রৌপ্য মুদ্রা, বাটখারা, লৌহ কুঠার, বল্লম, পোড়ামাটির কিন্নর ও অসংখ্য পুঁথিসহ নানাবিধ প্রত্নবস্তু।


বেলাব উপজেলার দুটি গ্রাম ওয়ারি ও বটেশ্বর সহ পাশের শিবপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মাটি খুঁড়ে বের করা হয় আড়াই হাজার বছরের পুরনো প্রত্নস্থান ও বস্তু। এসব প্রত্নস্থান ও প্রত্নবস্তুর স্থায়ী সংরক্ষণ ও দর্শনার্থীদের প্রদর্শনের লক্ষ্যে ২০১৯ সালে শুরু হয় ”গঙ্গাঋদ্ধি” জাদুঘরের নির্মাণ কাজ।

স্থানীয় সরকারের দেয়া ৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকায় ৩ তলা বিশিষ্ট জাদুঘরটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের দরপত্রে নির্মাণ কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরসিসিএল-আরআই নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুই বছরে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৫ দফা মেয়াদ বৃদ্ধির পর ৬ বছরেও শেষ হয়নি জাদুঘরটির নির্মাণ কাজ। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটকরা ওয়ারি-বটেশ্বরের প্রত্ন নিদর্শন দেখতে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। দ্রুত ‘‘গঙ্গাঋদ্ধি” জাদুঘরের নির্মাণ কাজ শেষ করে ওয়ারি-বটেশ্বরকে পূর্ণাঙ্গ পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার দাবি এলাকাবাসীর।

নরসিংদী জেলা পরিষদ এর সহকারী প্রকৌশলী নূর-ই ইলহাম বলেন, ‘‘গঙ্গাঋদ্ধি” জাদুঘরের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ২-৩ মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। যেহেতু সরকারি টাকায় জাদুঘরটির অবকাঠামো নির্মাণ হচ্ছে ব্যক্তিগত জমিতে। নির্মাণের পর এটির ব্যবস্থাপনায় কে থাকবে, এ নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। এ জটিলতার কারণেই নির্মাণ কাজ কিছুটা মন্থর গতিতে চলছে। এ জটিলতা নিরসনে মন্ত্রণালয়ে পরামর্শ চাওয়া হবে।