বউভাতের দাওয়াত: হাসপাতালে ভর্তি ৫০ জন

০৯ অক্টোবর ২০১৯, ১১:৩৯ এএম | আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৯ এএম


বউভাতের দাওয়াত: হাসপাতালে ভর্তি ৫০ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায় বউভাতের দাওয়াত খেয়ে ৩০ পরিবারের নারী ও শিশুসহ অন্তত ৬০ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অসুস্থ্যদের মধ্যে ৫০ জন বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

গত সোমবার দুপুরে উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের ধনিপাড়া এলাকায় একটি বউভাতের অনুষ্ঠানে অসুস্থরা সবাই দাওয়াত খান। মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে তাদের মধ্যে বমি, পাতলা পায়খানা, পেট ব্যথাসহ জ্বরের উপসর্গ দেখা দেয়। এ নিয়ে সকলের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী ও সিভিল সার্জন ডা. নিজাম উদ্দীনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে যান এবং রোগীদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বর্তমানে সবাই আশঙ্কামুক্ত।

স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত সোমবার দুপুরে ধনিপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের একমাত্র ছেলে মাজেদুল ইসলামের বউভাতের দাওয়াত ছিল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সবাই বউভাতের দাওয়াত খান। এরপর মঙ্গলবার সকাল থেকে একে একে সবাই অসুস্থ হতে থাকেন।

এদের মধ্যে প্রথমে নারী ও শিশুসহ আটজনকে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বিকেল থেকে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে একই উপসর্গে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ির মালিক সিরাজুল ইসলাম (৫০), সাদ্দাম হোসেন (২৫), রহিমা আক্তার (৩২), আব্দুর রহমান (৭), লোকমান হোসেনসহ (৫), রফিকুল ইসলাম (৫৫), আনোয়ার হোসেন (৪২), জরিনা বেগম (৪৮), রাবেয়া খাতুন (২৫), রিফাত আক্তর (৪), নাঈম ইসলাম (১৩), শাহীন (৫). সুলতানা মৌ (৬), খাদিজা আক্তার চম্পা (২০), মকছেদা খাতুন (২২), বানু বেগম (৪২) সহ অর্ধশত রোগীকে বোদা, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।

আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি খাদিজা আক্তার চম্পা বলেন, বউভাতের দাওয়াত খাওয়ার পর থেকেই খারাপ লাগছিল। পরে বমি ও পেট ব্যথা শুরু হয়। পাশাপাশি জ্বর ও মাথা ব্যথাও ছিল। মঙ্গলবার দুপুরের পর হাসপাতালে ভর্তি হই। খুব ভয় পেয়েছিলাম।

বাড়ির মালিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দাওয়াতের আয়োজনে কোনো ত্রুটি ছিল না। আমাকে বিপদে ফেলার জন্য কেউ শত্রুতামূলক খাবারে কোনো কিছু মেশাতে পারে। আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যরাও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সিরাজ উদ দৌলা পলিন বলেন, ফুড পয়জনিং বা বদ হজমের কারণে এমনটি হতে পারে। খাওয়ার ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা দেরিতেও এই উপসর্গ দেখা দিতে পারে। বর্তমানে সবাই আশঙ্কামুক্ত।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, বউভাতের দাওয়াত খেয়ে আকস্মিক অসুস্থতা নিয়ে সকলের মাঝে একটা আতঙ্ক শুরু হয়। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, ফুড পয়জনিংয়ের কারণে এমনটা হতে পারে। তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে সকলেই আশঙ্কামুক্ত। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় কোনো দুষ্কৃতকারী চক্রের হাত রয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনকেও বলা হয়েছে।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও