হাঁটু পানিতে কয়রাবাসীর ঈদের নামাজ আদায়

২৫ মে ২০২০, ০৫:০৩ পিএম | আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৬ এএম


হাঁটু পানিতে কয়রাবাসীর ঈদের নামাজ আদায়
হাঁটু পানিতে কয়রাবাসীর ঈদের নামাজ আদায়। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে লন্ডভন্ড খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রা। বাঁধ ভেঙেছে। ঘর ভেঙেছে। থাকার কোনো জায়গা নেই মানুষের। ঘরে পানি ঢুকে গেছে। এবার ঈদের আনন্দ নেই কয়রাবাসীর মাঝে। হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে পড়তে হয়েছে ঈদের নামাজ।

তবে এসবে অনেকটা অভ্যস্ত এই উপজেলার মানুষ। আইলায় বছরের পর বছর যখন ডুবে ছিল প্রায় গোটা এলাকা, তখনও ঈদের নামাজ পড়তে হয়েছে নৌকায় অথবা বাঁশের ঝাপির ওপরে।

কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী এলাকার বাসিন্দা সিরাজুদ্দৌলা লিংকন, আইয়ুব আলী সানা, সদর উদ্দিন ও আব্দুল খালেক জানান, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে আর্থিক অসচ্ছলতার মধ্যে পড়া উপকূলবাসীর এবারের ঈদ উৎসব কেড়ে নিয়েছে আম্ফান। গত ২০ মে রাতে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ভয়াল থাবায় খুলনার উপকূলীয় কয়রা উপজেলা ছিন্নভিন্ন। ২৩টি বাঁধ ভেঙে সমুদ্রময় চারটি ইউনিয়ন।

লোনা পানি থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছে হাজার হাজার মানুষ। প্রতিদিনের মতো সোমবার ঈদের দিনও সদর ইউনিয়ের ২ নং কয়রা গ্রামের ক্লোজারে কোদাল হাতে বাঁধ মেরামতে হাজারও মানুষ অংশ নেন। কাজের মধ্যেই তাদের হাঁটু পানিতে ঈদের নামাজ পড়তে দেখা গেছে।

সদর ইউনিয়নে ২নং কয়রা গ্রামের ১৩/১৪-২ নম্বর পোল্ডারের কাজ শেষে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে আসা প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ ক্লোজারে হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে ঈদের জামাত আদায় করেন। ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা আ খ ম তমেজ উদ্দীন।

কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, কয়রাবাসীর বেড়িবাঁধ নিয়ে আন্দোলন ২৫ মে থেকে নতুন মাত্রায় যুক্ত হবে। এখন পর্যন্ত টেকসই বাঁধ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব কিছু ঠিকাদার দিয়ে করা কাজের মান ছিল নিম্নমানের। ফলে আম্পানের আঘাতে সেসব স্থানই আগে ভেঙেছে আর এলাকা লোনা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এখানে ভালো ফসল হয়, মাছ চাষ হয়। এখন কয়রার মানুষ বাঁধ চায়। ত্রাণের দরকার হবে না। প্রয়োজন টেকসই বাঁধ।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সাহ বলেন, আইলা বিধ্বস্ত কয়রা এখন আম্পানে বিধ্বস্ত হয়ে আরও মুখথুবড়ে পড়েছে। কয়রার ৪টি ইউনিয়নের সমগ্র এলাকা লোনা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। কয়রার মানুষ এখন স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা ঈদের দিন বাঁধের ওপরই নামাজ আদায় করে সেমাই খেয়ে মেরামতে নেমে পড়েছেন। দুপুরে তাদের জন্য খিচুড়ির আয়োজন রয়েছে।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও