আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা

০৭ অক্টোবর ২০১৯, ০৪:৫৩ পিএম | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৭ পিএম


আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ

টাইমস ডেস্ক:

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তার মামাতো ভাই আবু তালহা। তিনি বলেন, “আমার ভাইকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আমরা ওর গায়ে অনেক জখম দেখতে পেয়েছি।”

রবিবার (৬ অক্টোবর) রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে তাকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আবু তালহা বলেন, “সোমবার ভোর ৫টার দিকে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয়, আমরা আবরারের বন্ধু। ও অসুস্থ, আপনারা ঢাকা মেডিক্যালে চলে আসেন। এরপর আমি ও আমার বড় ভাই ঢাকা মেডিক্যালে এসে অনেক খোঁজাখুঁজির পর আবরারকে না পেয়ে জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে দেখি পুলিশ একটি গাড়িতে করে লাশ নিয়ে এসেছে। কী হয়েছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ভেতরে কী হয়েছে আমরা জানি না। খবর পেয়ে আমরা লাশ নিয়ে এসেছি। কিছুক্ষণ পর হলের সহকারী প্রভোস্ট ড. শাহিনুর ইসলাম ও বুয়েটের ডাক্তার মাসুক এলাহী মেডিক্যালে আসেন। তাদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমরা এখনই কিছু বলতে পারছি না।”

শেরে বাংলা হলের চার বেডের রুম ১০১১-এ থাকতেন আবরার। ওই রুমে সব মিলিয়ে ৮-১০ জন শিক্ষার্থী থাকেন। এ ঘটনার পর থেকে ওই রুমের শিক্ষার্থীরা ভয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন না।

আবরার যে ফ্লোরে থাকতেন সেই ফ্লোরের একটি রুমের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, “রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে দুটো ছেলে এসে আবরারকে ডেকে নিয়ে যায়। ঘণ্টা দুয়েক পরে ওরা আবরারের জামাকাপড় নিতে আসে। এর কিছুক্ষণ পর আমি ওই রুমে গিয়ে দেখি বাকি রুমমেটরা কান্নাকাটি করছে।”

আরেক রুমের এক শিক্ষার্থী বলেন, “রবিবার রাত ২টার দিকে দোতলার সিঁড়িতে পানি আনতে গিয়ে দেখি সিঁড়িতে তোষকের ওপর আবরারকে ফেলে রাখা হয়েছে। তখন সেখানে আরও তিনজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি। ওরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ অবস্থা দেখে ট্রমাটাইজ হয়ে আমি রুমে চলে আসি। আবার গিয়ে দেখি সেখানে দু’জন দাঁড়িয়ে আছে। তখন আবরার প্রায় মৃত। পরে আমরা ডাক্তার ডাকি। এরপর অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে চাইলে ডাক্তার বলেন, ও তো মারা গেছে, অ্যাম্বুলেন্স ডেকে কী করবা। পরে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়।”

হলের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ২০১১ নম্বর রুমে আবরারকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।

আবরার ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। বাবা বরকত উল্লাহ এনজিও কর্মী। আর মা রোকেয়া বেগম কিন্ডার গার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে আবরার বড়। তার ছোট ভাই ঢাকা কলেজে পড়ে।

সূত্র: খবর বাংলা ট্রিবিউন।


বিভাগ : বাংলাদেশ


এই বিভাগের আরও