দেড় দশকে ৪২ শতাংশ কমেছে দেশের হস্তচালিত তাঁত

২৯ জুন ২০১৯, ০৬:৪৭ পিএম | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৪ পিএম


দেড় দশকে ৪২ শতাংশ কমেছে দেশের হস্তচালিত তাঁত
নরসিংদীর রায়পুরায় তাঁত শিল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক:

২০০৩ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে দেশে হস্তচালিত তাঁতের সংখ্যা কমেছে ২ লাখ ১৫ হাজারেরও বেশি। শতাংশের হিসাবে এই দেড় দশক সময়ে তাঁত কমেছে প্রায় ৪২ শতাংশ। একই সময়ে তাঁত শিল্পে নিয়োজিত মানুষের সংখ্যা কমেছে ৫ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ জন। শতাংশের হিসাবে তা প্রায় ৬৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তাঁত শুমারি-২০১৮-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সম্প্রতি রাজধনীর আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবনের আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আবুল কালাম আজাদ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গুলনাহার নাজমুন্নহার।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক ড. কৃষ্ণা গায়েনের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন জরিপ শাখার পরিচালক জাহিদুল হক সরদার। মূল প্রবদ্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ।
২০১৮ সালে পরিচালাতি তাঁত শুমারির হিসাব অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে তাঁতের সংখ্যা ২ লাখ ৯০ হাজার ২৮২টি। এর মধ্যে সক্রিয় তাঁত রয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৭২৩টি। অন্যদিকে ২০০৩ সালের শুমারিতে তাঁতের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৫ হাজার ৫৫৬টি। এর মধ্যে সক্রিয় ছিল ৩ লাখ ১১ হাজার ৮৫১টি তাঁত। এরও আগে ১৯৯০ সালের শুমারিতে তাঁতের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ১৪ হাজার ৪৫৬টি এবং সক্রিয় তাঁত ছিল ৩ লাখ ৫২ হাজার ২১৩টি।

তাঁত শুমারির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ৩ লাখ ১৬ হাজার ৩১৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৪০ হাজার ৪৫ জন, নারী ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৭০ জন। এর আগে ২০০৩ সালের শুমারিতে এই শিল্প খাতে নিয়োজিত জনবল ছিল ৮ লাখ ৮৮ হাজার ১১৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ছিলেন ৪ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৭ জন, নারী ৪ লাখ ১৫ হাজার ৭৪৮ জন।
এরও আগে, ১৯৯০ সালের শুমারির তথ্য অনুযায়ী, তাঁত শিল্পে যুক্ত ছিলেন ১০ লাখ ২৭ হাজার ৪০৭ জন। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৫ লাখ ৭১ হাজার ৭৬৫ জন, নারী ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৬৪২ জন।


এদিকে দেশে তাঁতশিল্প কমার কারণ হিসেবে প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, তাঁত বন্ধ হওয়ার কারণ হিসেবে ৮৩ দশমিক ৫ শতাংশ তাঁতি বলেছেন মূলধনের অভাবের কথা। এ ছাড়া সুতার মূল্য বেড়ে যাওয়াকে ৫৫ দশমিক ১ শতাংশ, সুতার অভাবকে ৩৭ শতাংশ, বিপণনের সমস্যাকে ২৭ দশমিক ৭ শতাংশ, দক্ষ শ্রমিকের অভাবকে ২৯ দশমিক ২ শতাংশ, নকশার অভাবকে ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ, উন্নত প্রযুক্তির অভাবকে ২৩ দশমিক ২ শতাংশ এবং রং ও রাসায়নিকের দাম বেড়ে যাওয়াকে ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ তাঁতি তাঁত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এ ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলাবদ্ধতা বা বন্যা, কৃষি খাতে অন্তর্ভুক্তি, অলাভজনক হওয়া, ব্যবসা পরিবর্তনসহ তাঁতিরা আরো বেশকিছু কারণ উল্লেখ করেছেন বলে জানিয়েছেন মহিউদ্দিন আহমেদ।


বিভাগ : অর্থনীতি


এই বিভাগের আরও