পাট ও সিসাল ব্যবহারে জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রস্তাব

১২ অক্টোবর ২০১৯, ০২:০৭ পিএম | আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪, ০২:২৮ এএম


পাট ও সিসাল ব্যবহারে জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রস্তাব
জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটির প্লেনারি সভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন।

টাইমস ডেস্ক :
পাটের মতো প্রাকৃতিক তন্তু ব্যবহারে জাতিসংঘে প্রস্তাব তুলেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটির প্লেনারি সভায় ‘কৃষি উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি’ বিষয়ক’ এজেন্ডার (এজেন্ডা-২৪) আওতায় এই প্রস্তাব তুলে ধরেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন।

তিনি বলেন, কৃত্রিম তন্তুর বিপরীতে প্রাকৃতিক তন্তু ব্যবহারের সুবিধার ক্ষেত্রে এখনও যথেষ্ট জনসচেতনতা সৃষ্টি হয়নি। এ বিষয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতি ও সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে সাধারণ পরিষদে একটি রেজুলেশন গ্রহণ করা প্রয়োজন। আর এই প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বাংলাদেশ প্রাকৃতিক তন্তু যেমন পাট ও সিসাল-এর ব্যবহার বিষয়ক প্রস্তাবটি উত্থাপন করল।

পাট এক সময় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য ছিল। প্লাটিকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার পর পাট শিল্প ধুঁকতে থাকে। তবে এখন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্লাস্টিক বর্জনের আওয়াজ ওঠায় পাটের সুদিন ফেরার আশা করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, প্রাকৃতিক তন্তু ব্যবহারের বৈশ্বিক সচেতনতা সৃষ্টিতে এই প্রস্তাব হতে পারে একটি কার্যকর দলিল, যা শুধু উৎপাদনকারী বা শিল্প-প্রতিষ্ঠানের জন্যই নয়, ভোক্তাদের জন্যও এনে দেবে প্রকৃতিকে বাঁচানোর একটি সুযোগ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই প্রস্তাব টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এবং পরিবেশ সুরক্ষায় রাষ্ট্রগুলোকে সাহায্য করবে। বাংলাদেশের আনা এই প্রস্তাব সমর্থন করতে স্থায়ী প্রতিনিধি সব সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

রাষ্ট্রদূত মোমেন কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সাফল্যগুলোও তুলে ধরে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের সাহসী ও বাস্তবভিত্তিক নীতি-কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে কৃষিখাতে আমূল পরিবর্তন এসেছে, গ্রামীণ উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ক্ষমতায়িত হয়েছে, আর ক্ষুদ্র কৃষিজীবি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাগণ স্থানীয় ভিত্তিতে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থাপনার ফলে সুরক্ষিত রয়েছে। বাংলাদেশ আজ শাক-সবজি উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, চাল উৎপাদনে চতুর্থ এবং মৎস্য উৎপাদনে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সাধারণ পরিষদের আরেক অধিবেশনে রাষ্ট্রদূত মাসুদ শিশু অধিকার রক্ষা ও শিশু সুরক্ষার পদক্ষেপসমূহ এগিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, শিশু অধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদের ৩০ বছর পূর্তি অতি সন্নিকটে। আমাদের উচিত উপলক্ষটির পূর্ণ ব্যবহার করা। তাই শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, আসুন শিশু অধিকার সমুন্নত রাখতে আমাদের সম্মিলিত প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে কাজ করি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন কর্তৃক ‘ভ্যাকসিনেশন হিরো’ এবং যুবদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ইউনিসেফ কর্তৃক ‘চ্যাম্পিয়ন ফর স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, এ জাতীয় আন্তর্জাতিক পুরষ্কার শিশু ও যুব উন্নয়ন ও তাদের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রারই স্বীকৃতি।

বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনটিকে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালনের বিষয়টি তুলে ধরে মাসুদ বলেন, এটা শিশুদের প্রতি সরকারের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার বহিঃপ্রকাশ।


বিভাগ : অর্থনীতি


এই বিভাগের আরও