করোনাকাল: অবসর দিনগুলো কাটান আধ্যাত্মিকতা চর্চায়
২৩ এপ্রিল ২০২০, ১০:৪৮ পিএম | আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৮ এএম

জীবনযাপন ডেস্ক:
মহামারি করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা ক্রমেই বেড়েই চলছে। কেউ আজ তা থেকে নিরাপদ নয়। এখন কেবল আল্লাহ তাআলাই পারেন মানুষকে রক্ষা করতে। আমাদের উচিত মহামারি করোনার এ দিনগুলো বৃথা নষ্ট না করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইবাদত-বন্দেগিতে রত হওয়া। এতদিন বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে যা করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি এখন এই দিনগুলো কাজে লাগাই। সেই সাথে দু-একদিন পরই পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। তাই সময় নষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই। নিজের পাপের ক্ষমা চাই এবং পরিবারকে সৎপথে চলার নসিহত করি।
পৃথিবীর সব চেষ্টা-প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও তিনি ইচ্ছে করলে মুহূর্তেই বিশ্বের সব বালা-মুসিবত দূর করে দিতে পারেন। কিন্তু এর আগে আমাদের সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। পবিত্র রমজানে আমাদের রাতগুলো ইবাদতের মাধ্যমে জাগ্রত রাখতে হবে, সেজদার স্থানগুলো অশ্রুজলে সিক্ত করতে হবে।
আমাদের প্রত্যেকের আত্মবিশ্লেষণ করা উচিত, আমরা কি আল্লাহর অধিকার এবং বান্দার অধিকার পরিপূর্ণভাবে আদায় করেছি? পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
“বলুন, আমি কি আসমান জমিনের স্রষ্ঠা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যকে অভিভাবক বানিয়ে নেব, অথচ তিনিই খাওয়ান, তাঁকে খাওয়ানো হয় না, বল আমাকে আদেশ করা হয়েছে আমি যেন আত্মসমর্পণকারীদের প্রথম হই, আর তুমি কিছুতেই মুশরিকদের মধ্যে শামিল হবে না।” (সুরা আনআম : আয়াত ১৪)
পবিত্র কুরআনের এই আয়াত থেকে সুস্পষ্ট বোঝা যায় যে, আমাদের সবার প্রকৃত সাহায্যকারী হচ্ছেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। তিনিই পারেন আমাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করতে। বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে আমরা যেহেতু বাসায় অবস্থান করছি আর এ সুবাদে হাতে প্রচুর সময়ও রয়েছে তাই সন্তানদের জন্য উত্তম শিক্ষার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাবা-মার উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘কোনো বাবা তার ছেলেকে উত্তম শিষ্টাচার অপেক্ষা অধিক শ্রেয় আর কোনো বস্তু দান করতে পারে না।’ (তিরমিজি)
বাবা-মার উচিত হবে পুরো রমজানে সন্তানদের উত্তম শিক্ষা দেয়ার বিষয়ে বিশেষ প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা। আবার বাবা-মার প্রতিও সন্তানের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। বাবা-মার প্রতি আমাদের যা করণীয় সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-
‘তোমার প্রতিপালক হুকুম জারি করেছেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কারো ‘ইবাদাত করো না, আর পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো। তাদের একজন বা তাদের উভয়ে যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে বিরক্তি বা অবজ্ঞাসূচক কথা বলো না, আর তাদেরকে ভৎর্সনা করো না। তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। তাদের জন্য সদয়ভাবে নম্রতার বাহু প্রসারিত করে দাও আর বল, ‘হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া কর যেমনভাবে তারা আমাকে শৈশবে লালন পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৩-২৪)
আল্লাহ তাআলা এ দুনিয়াতে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি দিয়ে থাকেন পরীক্ষা করার জন্য। অনেককে আল্লাহ তাআলা প্রচুর ধন-সম্পদ দান করেন ঠিকই কিন্তু সেই ধন-সম্পদের সঠিক ব্যবহার না করার ফলে দেখা যায় তা ধ্বংস হয়ে যায় আবার কাউকে সন্তান-সন্তুতি দেন ঠিকই কিন্তু সুশিক্ষার অভাবে এই সন্তান তাদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়।
সন্তান-সন্তুতি যদি প্রকৃত নৈতিকগুণ সম্পন্ন না হয় তাহলে বাবা-মার জন্য একটি বড় আজাব ছাড়া কিছুই নয়। মানুষের জীবনব্যবস্থা মহা গ্রন্থ আল-কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন-
- ‘ধন-সম্পদ আর সন্তানাদি দুনিয়ার জীবনের শোভা-সৌন্দর্য, আর তোমার প্রতিপালকের কাছে পুরস্কার লাভের জন্য স্থায়ী সৎকাজ হল উৎকৃষ্ট আর আকাঙ্ক্ষা পোষণের ভিত্তি হিসেবেও উত্তম।' (সুরা কাহাফ: আয়াত ৪৬)
- ‘জেনে রেখ, তোমাদের ধন-সম্পদ আর সন্তান- সন্ততি হচ্ছে পরীক্ষার সামগ্রী মাত্র। (এ পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবে তাদের জন্য) আল্লাহর নিকট রয়েছে মহাপুরস্কার।' (সুরা আনফাল: আয়াত ২৭)।
তাই প্রত্যেক বাবা-মার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হচ্ছে নিজ সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষত করে তোলা। করোনার এদিনগুলো বৃথা নষ্ট না করে সন্তানদের তরবিয়তের দিকে আমাদের দৃষ্টি দেয়া জরুরি। তাই সন্তানদের নিয়ে বসতে হবে, তাদের সময় দিতে হবে, সন্তানরা কুরআন পড়তে না পারলে তাদের তা শেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
করোনার এ অবসর দিনগুলো যদি আমরা আমাদের ঘরগুলো মসজিদে পরিণত করি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জামাআতে আদায় করি। তবে আমাদের সন্তানদের মাঝে যেমন নামাজ পড়ার অভ্যাস সৃষ্টি হবে তেমনি পরিবারে প্রবাহিত হবে শান্তির সুবাতাস।
পরিশেষে-
হোম কোয়ারেন্টাইনের এ দিনগুলো পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাটুক আধ্যাত্মিকতা চর্চায়। সে হিসেবে যে কাজগুলো সহজেই করা যেতে পারে তাহলো-
- পরিবারকে সাথে নিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাআতে পড়া।
- ঘরেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রমজানের বিশেষ ইবাদত তারাবির নামাজ আদায় করা।
- নামাজের দোয়াগুলো অর্থসহ শেখা এবং পড়া।
- প্রত্যেক নামাজের পর পবিত্র কুরআনের দরসের ব্যবস্তা রাখা।
- কুরআন হাদিসের বিভিন্ন দোয়া মুখস্ত করা।
- কুরআনের বিভিন্ন সুরা মুখস্ত করা ও কুরআন চর্চা করা।
- পরিবারের সবাই একসঙ্গে বিভিন্ন ইসলামি বই পাঠচক্রের আকারে পড়া।
- প্রয়োজনীয় যে দোয়াগুলো জানাে নেই তা মুখস্ত করে নেয়া।
- জানাজার দোয়াগুলো না জানলে তা জেনে নেয়া এবং মুখস্ত করে নেয়া।
- একত্রে সাহরি ও ইফতার করা।
- সাহরির আগে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা।
তাই আসুন, মহামারি করোনা এ সময়ে রহমতের মাস রমজানে পুরো পরিবার নিয়ে দোয়া, ইস্তেগফারে রত হই। নিজ ঘরেই এক আধ্যাত্মিক প্রশান্তিময় পরিবেশ সৃষ্টি করি। সেজদাবনত হয়ে মহান রবের কাছে রহমতের মাস রমজানে এ দোয়া করি, হে আল্লাহ! আপনি রমজানের রহমতের উসিলায় পুরো বিশ্বকে মহামারি করোনা মুক্ত করে দিন। আমিন।
লেখক: মাহমুদ আহমদ , ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট।
বিভাগ : জীবনযাপন
- মাধবদী বাজারে আগুনে পুড়ল ৪০ দোকান
- জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আলোচনা সভা
- আমিরগঞ্জ ইউপি কার্যালয়ে যুবকের ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী নিহত
- নরসিংদীতে জুলাই-আগস্টের শহীদ ও আহতদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠান
- হাসনাবাদ বাজারে নকল কীটনাশক জব্দ, ব্যবসায়ীকে জরিমানা
- জালিয়াতি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুই কর্মচারী গ্রেপ্তার, ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার
- ডিস ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা
- নরসিংদীতে ট্রেনের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী স্বামী-স্ত্রী নিহত
- নরসিংদীতে রথযাত্রা উৎসব পালিত
- ৩০০ আসনে জামায়াতের প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও আগামী দিনে প্রার্থী কমবেশি হতে পারে: এড. মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল
- মাধবদী বাজারে আগুনে পুড়ল ৪০ দোকান
- জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আলোচনা সভা
- আমিরগঞ্জ ইউপি কার্যালয়ে যুবকের ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী নিহত
- নরসিংদীতে জুলাই-আগস্টের শহীদ ও আহতদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠান
- হাসনাবাদ বাজারে নকল কীটনাশক জব্দ, ব্যবসায়ীকে জরিমানা
- জালিয়াতি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুই কর্মচারী গ্রেপ্তার, ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার
- ডিস ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা
- নরসিংদীতে ট্রেনের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী স্বামী-স্ত্রী নিহত
- নরসিংদীতে রথযাত্রা উৎসব পালিত
- ৩০০ আসনে জামায়াতের প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও আগামী দিনে প্রার্থী কমবেশি হতে পারে: এড. মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল