নতুন বছরটা দুঃসংবাদ দিয়ে শুরু হল সাব্বিরের

০২ জানুয়ারি ২০১৮, ০৭:০০ এএম | আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৪, ০৪:২৪ এএম


নতুন বছরটা দুঃসংবাদ দিয়ে শুরু হল সাব্বিরের
অনলাইন ডেস্ক   নতুন বছরটা দুঃসংবাদ দিয়ে শুরু হল বাংলাদেশ দলের ওপেনার তামিম ইকবাল ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমানের। জাতীয় ক্রিকেট লীগের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে এক দর্শককে পেটানোর দায়ে বড় শাস্তিই পেতে যাচ্ছেন সাব্বির রহমান। বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটি তাকে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেয়ার সুপারিশ করেছে। এছাড়া ২০ লাখ টাকা জরিমানা ও ছয় মাস ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে শৃঙ্খলা কমিটি। বিসিবির আগামী বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। একই সঙ্গে বিপিএলের সময় মিরপুরের উইকেট নিয়ে সমালোচনা করায় তামিম ইকবালকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ও সতর্ক করার সুপারিশ করা হয়েছে। রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে প্রথম শ্রেণীর ম্যাচের দ্বিতীয় দিন এক কিশোর দর্শককে পেটানোর অভিযোগ ওঠে সাব্বিরের বিরুদ্ধে। ম্যাচ রেফারি এ বিষয়ে সাব্বিরের কাছে জানতে চাইলে তাকেও হুমকি দেন তিনি। ম্যাচ রেফারি শওকাতুর রহমান চিনুর রিপোর্ট পাওয়ার পর শুনানি শেষে সাব্বিরের শাস্তির সুপারিশ করেছে শৃঙ্খলা কমিটি। এ নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান সোমবার ধানমণ্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সাব্বিরের বিষয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। শুনানির পর বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সবকিছুই শেষ। ম্যাচ রেফারির রিপোর্টও পেয়েছি। তার বিষয়ে প্রস্তাব এসেছে, আমাদের যে কেন্দ্রীয় চুক্তি আছে, সেটি থেকে সে বাদ পড়তে যাচ্ছে। সে আর চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার থাকছে না। সঙ্গে ২০ লাখ টাকা জরিমানা। পাশাপাশি ছয় মাস ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে।’ ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রাথমিক দলে আছেন সাব্বির। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে কোনো বাধা নেই তার। এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘সিদ্ধান্ত যে এখনই হয়ে গেছে, তা নয়। প্রস্তাব এসেছে শৃঙ্খলা কমিটি থেকে। শৃঙ্খলা কমিটি বলেছে, এবারই শেষ সুযোগ দেয়া হয়েছে। এরপরও এমন কিছু ঘটলে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করার ভাবনাও আছে।’ শৃঙ্খলাজনিত কারণে আগেও শাস্তি পেয়েছেন সাব্বির। ২০১৬ সালে বিপিএলে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় দিতে হয়েছিল ১২ লাখ টাকা জরিমানা। বিপিএলের পঞ্চম আসরেও শাস্তি পেয়েছেন তিনি। এদিকে বিপিএলে ২ ডিসেম্বর রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ম্যাচ শেষে তামিম মিরপুরের উইকেটকে বলেছিলেন ‘জঘন্য’। মিরপুরের আউটফিল্ড ও কিউরেটর নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। ১২ ডিসেম্বর হয় তামিমের শুনানি। এমন কড়া মন্তব্যের জন্য তামিম তখন আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপরও শৃঙ্খলা কমিটি তামিমকে জরিমানার সুপারিশ করেছে। তামিমের ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘তামিমকে শক্ত আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। অনেকেই বলছেন, মাশরাফি, মোসাদ্দেকও একই কথা বলেছে উইকেট নিয়ে। বিদেশি ক্রিকেটাররাও বলেছে। কিন্তু তামিমের ব্যাপারটি ছিল পুরো আলাদা। যা হয়েছে তার সবকিছু বলে দিলে তার প্রভাব বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওপর পড়তে পারে। সে যে ধরনের কথাবার্তা বলেছে, তা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ছিল বিপজ্জনক। এটা আমাদের ক্রিকেটের অনেক ক্ষতি করতে পারে বা পারত।’ এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের সময় আম্পায়াররা মিরপুরের আউটফিল্ড নিয়ে রিপোর্ট করায় দুই ডিমোরিট পয়েন্ট কাটা হয়েছে। আর দুটি পয়েন্ট কাটা হলে মিরপুরে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ থাকবে। তামিম আউটফিল্ড নিয়ে সমালোচনা করাতেই মূলত বিসিবি নাখোশ হয়েছে। নাজমুল হাসান বলেন, ‘পিচ নিয়ে ক্রিকেটাররা বলতেই পারে যে টি ২০-র জন্য আদর্শ নয়। কিন্তু আউটফিল্ড নিয়ে বলবে কেন? কিউরেটর নিয়ে বলবে কেন? আমাদের আউটফিল্ড এরই মধ্যে দুটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছে। চারটা হলে ঢাকা শহরে আর কোনো খেলা হবে না। তো এটা কী ধরনের কথাবার্তা? কথাবার্তায় আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।’ বিসিবি সভাপতির কথায় মনে হল, উইকেট নিয়ে সমালোচনা করার জন্যই টেস্ট দলের সহ-অধিনায়কত্ব হারিয়েছেন তামিম। বোর্ড সভাপতি বলেন, ‘অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক হলে বা যেসব ক্রিকেটারের মিডিয়ার কাছে যাওয়ার সুযোগ থাকে, তাদের কথাবার্তা চিন্তাভাবনা করে বলতে হবে। এটার জন্য নেতৃত্বে বদল হয়েছে, তা নয়। তবে এটিও অন্যতম কারণ।’ এদিকে জাতীয় দলের নতুন কোচ নিয়োগ নিয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানালেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আগেই বলেছিলাম সামনের সিরিজের আগে আমরা কোচ নিয়োগ করতে পারছি না। বোর্ড থেকে যে প্রতিনিধি থাকে, সাপোর্ট সার্ভিস যা থাকে, সেরকমই থাকছে। পাশাপাশি আমাদের খালেদ মাহমুদ সুজন, যে সব সময় ম্যানেজার হিসেবে কাজ করত, বোর্ড ও ক্রিকেটারদের মধ্যে একটা সংযোগ হিসেবে কাজ করত, সে থাকছে। এজন্য তাকে একটা পদবি দিয়ে রাখা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাকে যদি আপনারা জিজ্ঞেস করেন, তবে বলব এবার কোচ হচ্ছে সাকিব ও মাশরাফি। আমার যা মনে হয়। সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। ওরা বেশ আত্মবিশ্বাসী যে এই সিরিজ নিজেরাই সব সামলাতে পারবে। এবার তাই ক্রিকেটাররাই কোচ। এছাড়া সাপোর্ট স্টাফ যারা আছে, তারা তো থাকবেই।’


এই বিভাগের আরও