ঘোড়াশাল বাজারে ক্ষুধার তাড়নায় বেড়েছে ২ বানরের অত্যচার

২৫ আগস্ট ২০১৯, ১১:১৩ পিএম | আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৯ পিএম


ঘোড়াশাল বাজারে ক্ষুধার তাড়নায় বেড়েছে ২ বানরের অত্যচার

পলাশ প্রতিনিধি ॥
দোকানের ফল ছিনিয়ে নেওয়া, ফল ফেলে দিয়ে নষ্ট করা, রুটির দোকানের রুটি ছিনিয়ে নেওয়া ও বাজারের বিভিন্ন দোকানের মালামাল ফেলে নষ্ট করা এবং বাধা দিতে গেলে পাল্টা হামলা করছে দুই বানর।
প্রায় ১ বছর ধরে ক্ষুধার তাড়নায় দুটি বানরের নিয়মিত ছিনতাই, বাদরামি ও অত্যচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। সুযোগ পেলেই দুই বানর ফলের দোকানের ফল, বিভিন্ন হোটেলের খাবার সাবাড় করা সহ বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল নষ্ট করছে। বাধা পেলে দাঁত খিঁচিয়ে তেড়ে আসছে বা ঝাঁপিয়ে পড়ছে মানুষের গায়ের ওপর। বানরের হামলায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।


ব্যবসায়ীরা জানান, ঘোড়াশাল বাজার এলাকা থেকে বাংলাদেশ জুটমিল পর্যন্ত প্রায় কয়েক’শ দোকান ও বসতঘর রয়েছে। প্রায় সব দোকান ও বসতঘরে হানা দিচ্ছে এই দুই বানর। সাধারণত এই ধরনের বানর জনবহুল এলাকায় দেখা যায় না। কিন্তু জনবহুল ঘোড়াশাল বাজার এলাকায় এই বানর দু’টি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
শনিবার বিকেলে সরেজমিনে ঘোড়াশাল বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা মিলে বানর দুটির। একটি চায়ের দোকানের টিনের চালে কিছুক্ষণ বসে থেকে মুহুর্তেই চায়ের দোকানের রুটির ব্যাগে থাবা মেরে রুটি নিয়ে যায়। সেই সাথে কিছু রুটি মাটিতেও ফেলে নষ্ট করে দেয়।


স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় বাংলাদেশ জুটমিলের প্রয়োজনীয় পাট মাদারীপুর জেলার চরমুগুরিয়া উপজেলা থেকে ট্রাকে করে আনা হতো। ওই সময়ই একটি ট্রাকে করে বানর দু’টি বাংলাদেশ জুটমিলে আসে। এরপর থেকে বানর দু’টি ওই জুটমিলেই বসবাস করে। বানর দু’টি এলাকায় আগে এমন না করলেও প্রায় এক বছর ধরে ক্ষুধার তাড়নায় বিভিন্ন দোকানে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করছে।
গত বুধবার ঘোড়াশাল বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী মো. কাশেম মিয়ার হোটেলে এই বানর দু’টি থাবা মেরে অনেক খাবার নষ্ট করে। পরে হোটেল দোকানী কাশেম মিয়া বানর দু’টিকে বাধা দিতে গেলে তারা কাশেম মিয়ার ওপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে। পরে স্থানীয়রা দৌড়ে আসলে বানর দুটি চলে যায়। পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় কাশেম মিয়াকে ঘোড়াশাল রওশন জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কাশেম মিয়া দুই দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেন।


বানরের এমন অত্যাচারের বিষয়ে বাংলাদেশ জুটমিলের নিরাপত্তাকর্মী দুলাল মিয়া জানান, প্রায় চার বছর ধরে এই বানর দুটি বাংলাদেশ জুটমিলেই বসবাস করছে। আগে এতো অত্যচার না করলেও এক বছর ধরে খুব অত্যচার করছে।
ঘোড়াশাল বাজার এলাকার ফল ব্যবসায়ী মুন্না মিয়া জানান, কিছু দিন আগে বানর দুটি আমার দোকানের সব ফল ফেলে নষ্ট করে দেয়। এই বানর দুটির অত্যাচারে এ বাজারের ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ট। আমরা বানরের বিষয়ে অনেকবার উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে অভিযোগ দিলেও কোনো লাভ হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জামাল উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।