শিবপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় গর্ভপাতের শিকার অন্তসত্ত্বা নারী

২৭ জুন ২০২২, ০৯:৫৩ পিএম | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৩ এএম


শিবপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় গর্ভপাতের শিকার অন্তসত্ত্বা নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীর শিবপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় তাছলিমা আক্তার (৩৫) নামের তিনমাসের অন্তসত্ত্বা এক নারীর গর্ভপাতের শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই সময় ছিনিয়ে নেওয়া হয় স্বর্ণালংকারসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ও পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি ঘর।

রোববার দিবাগত রাতে শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় তাছলিমার স্বামীর বড়ভাই মনির হোসেন বাদী হয়ে প্রতিবেশী চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম ওরফে সুমনসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামী করে শিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

গর্ভপাতের শিকার তিনমাসের অন্তসত্ত্বা তাছলিমা আক্তার শিবপুরের জয়নগরের পশ্চিমপাড়ার মোক্তার হোসেনের স্ত্রী। এ সময় আরও আহত হন তাছলিমার শাশুড়ি সুফিয়া বেগম (৬০)।

পরিবারটির সদস্যদের অভিযোগ, পৈত্রিক সম্পত্তির বণ্টন সংক্রান্ত জটিলতায় প্রতিবেশী চাচাত ভাইদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরিবারটির বিরোধ চলছে। এর জেরে মাসখানেক আগে দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একাধিক শালিশ বৈঠক করেন। শালিসের রায় উপেক্ষা করে মোক্তার হোসেনসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম ওরফে সুমন। ওই মামলায় মোক্তার হোসেন বর্তমানে কারাগারে আছেন।

রোববার রাত সোয়া ৯টার দিকে সুযোগ বুঝে সাইফুল ইসলাম সুমনের নেতৃত্বে অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জন মিলে মোক্তার হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা তাছলিমার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ও একটি গৃহপালিত গরুসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ছিনিয়ে নেন এবং ওই ঘর ভাংচুর করেন। এ সময় বাধা দিতে গেলে মোক্তার হোসেনের অন্তসত্ত্বা স্ত্রী তাছলিমার পেটে বেধরক কিল-ঘুষি ও লাথি মারা হয়। তাকে বাঁচাতে গেলে শাশুড়ি সুফিয়া বেগমকেও মারধর করেন তারা। পরে যাওয়ার সময় পার্শ্ববর্তী অপর একটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করেন তারা। 

এ সময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নেভান। পরিবারের সদস্যরা আহত তাছলিমাকে উদ্ধার করে প্রথমে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হাসপাতালে সঙ্গে থাকা স্বজন ইয়াসমিন বেগম জানান, আহত তাছলিমা তিনমাসের অন্তসত্ত্বা ছিলেন। হাসপাতালটির চিকিৎসকরা পরীক্ষা শেষে জানিয়েছেন, তলপেটে আঘাতের ফলে তার গর্ভপাত ঘটেছে। বর্তমানে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা।

শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন মিয়া জানান, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এই বিষয়ে তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।