মাটি কেটে বিক্রি হচ্ছে ইটভাটায়: হুমকীর মুখে ঐতিহ্যবাহী ধাঁধার চর

২৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:২৪ পিএম | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪, ০৮:১৬ এএম


মাটি কেটে বিক্রি হচ্ছে ইটভাটায়: হুমকীর মুখে ঐতিহ্যবাহী ধাঁধার চর

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদী ও গাজীপুর জেলার সীমানায় শীতলক্ষ্যা-ব্রক্ষপুত্র নদের ত্রিমোহনায় শত শত বছর পূর্বে প্রাকৃতিকভাবে জেগে ওঠা ধাঁধার চর আজ হুমকীর মুখে পড়েছে। একটি প্রভাবশালী মহল রাত বিরাতে ট্রলার ভরে চরের চারপাশ থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আর এসব মাটি বিক্রি হচ্ছে চরের আশে পাশের ইটভাটা গুলোতে। দীর্ঘদিন ধরে মাটি কাটা চললেও কার্যকর কোনো প্রদক্ষেপ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। এতে করে হুমকীর মুখে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী এই শতবর্ষী ধাঁধার চরটি।

নরসিংদীর শিবপুর ও গাজীপুরের কাপাসিয়া দুটি উপজেলার মধ্য খানে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের মাঝে এই চরটি অবস্থিত।

জানা যায়, প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১ কিলোমিটার প্রস্থবিশিষ্ট ধাঁধার চরের আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ বহুকাল যাবত উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া চরের জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। দুটি জেলার হাজার হাজার মানুষ চরে উৎপাদিত শাক-সবজি ও মৌসুমী ফলের ওপর নির্ভরশীল। তাছাড়া দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা হিসেবে ধাঁধার চরের ব্যাপক খ্যাতি ও পরিচিতি রয়েছে। এখানে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসুদের আগমন ঘটে। এ স্থানটি আকর্ষণীয় পিকনিক ও সুটিং স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। চার দিকে নদী বেষ্টিত থাকায় নৌ-বিহারের জন্য এটা একটি মনোরম স্থান। অথচ এই দর্শনী স্থানটির মাটি অবাদে কেটে নেওয়া হচ্ছে ইটভাটায়।

সরেজমিনে ধাঁধার চরের আশপাশ ঘুরে দেখা যায়, চরটির অধিকাংশ স্থানে বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। পাড়গুলোও অনেক অংশে কাটা রয়েছে। চরে নিয়মিত ফসল চাষী ছানাউল্লাহ সরকার ও মিলন মিয়া জানান, তাদের পূর্ব পুরুষরা এখানে চাষাবাদ করতো। সেই সুবাদে তারাও এখানে বিভিন্ন ফলস চাষ করে আসছে। গত কয়েক মাস ধরে একটি প্রভাশালী মহল রাতের আধাঁরে চর কেটে ট্রলার ভরে মাটি নিয়ে যাচ্ছে। আর এসব মাটি আশেপাশের ইটভাটায় বিক্রি হচ্ছে। অনেক সময় স্থানীয় কৃষকরা বাধা দিতে গিয়ে হামলার শিকারও হয়েছে। তারা জানায়, এভাবে মাটি কাটা চলতে থাকলে এক সময় চরটি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইছমত আরা মুঠোফোনে বলেন, শুনেছি দুর্বৃত্তরা রাতের আধাঁরে চরের মাটি কেটে নিয়ে যায়। যারা এই মাটি কাটার সাথে জড়িত তাদের নাম সংগ্রহের কাজ চলছে। এছাড়া চরে অভিযান চালানোর জন্য থানা পুলিশকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।



এই বিভাগের আরও