অগ্নিকাণ্ডে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান নিহতের ঘটনায় শিবপুরের গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া

০২ মার্চ ২০২০, ১১:২২ পিএম | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৫:০৫ পিএম


অগ্নিকাণ্ডে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান নিহতের ঘটনায় শিবপুরের গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর দিলু রোডে অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের তিনজন নিহতের ঘটনায় তাদের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর ইটনা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ছেলে শহিদুল কিরমানি রনি (৪২), ছেলের বউ জান্নাতুল ফেরদৌস (৩৭) ও একমাত্র নাতি রুশদীকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ বাবা মা। পরিবারজুড়ে চলছে শোকের মাতম। সান্তনা দেয়া ভাষা খোঁজে পাচ্ছেন না এলাকাবাসী আত্মীয়স্বজনরাও। সোমবার (০২ মার্চ) সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে শহিদুল কিরমানি রনিকে।


সরেজমিন গেলে নিহতদের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে রাজধানীর দিলু রোডের একটি বাসায় আগুনের ঘটনায় মারা যান ৫ জন। এরমধ্যে একই পরিবারের রয়েছেন স্বামী শহিদুল কিরমানি রনি (৪২), তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস (৩৭) ও একমাত্র সন্তান রুশদী (০৪)। একই পরিবারের ওই তিনজনের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের ইটনা গ্রামে। চাকুরির সুবাদে স্ত্রী সন্তান নিয়ে দিলুরোডের ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন শহিদুল কিরমানি।


বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ওই বাসায় অগ্নিকান্ডের পর শিশু সন্তান রুশদীর মরদেহ উদ্ধার করে দমকল বাহিনী। এসময় স্বামী শহিদুল কিরমানি রনি, তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকালে মারা যান বেসরকারি চাকুরিজীবী স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস। স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে দাফনের পর তাদের পথ ধরে আজ সোমবার সকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আইসিউতে থাকা স্বামী শহিদুল কিরমানিও। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একসঙ্গে ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি হারানোর ঘটনায় শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন কিরমানির বাবা মা ও আত্মীয় স্বজনেরা। তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজন হারানোর এই বেদনা।


তাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ইটনা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঢাকায় ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার বিকালে কিরমানির মরদেহ নরসিংদীর শিবপুরের ইটনা গ্রামের বাড়ি পৌঁছালে একনজর দেখতে ভীড় জমান এলাকাবাসী। শোকার্ত ওই পরিবারকে সান্তনা দেয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেন তারাও।


নিহত জান্নাতুল ফেরদৌস এর ভাই শাহাদাত হোসেন বিপ্লব বলেন, এ ধরনের অগ্নিকান্ড ঢাকা শহরে প্রায়ই ঘটছে। কিন্তু এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেদিকে সরকারের পদক্ষেপ নেয়া উচিত। আজকে আমার বোন, বোনের জামাই ও ভাগ্নেকে হারানোর বেদনা আমরা সইতে পারছি না।


নিহত কিরমানির ফুফাতো বোন শরীফা বলেন, আমার ভাই ও তার পরিবারটা যে এভাবে আগুনে শেষ হয়ে যাবে সেটা ভাবতে পারছি না। আল্লাহ যেন তাদের বেহেশত নসিব করেন।


বাঘাব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তরুন মৃধা বলেন, মর্মান্তিক এই অগ্নিকাণ্ডে একটি মেধাবী পরিবার অকালে শেষ হয়ে গেল। তাদের মৃত্যুতে পুরো ইউনিয়নজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একসঙ্গে একই পরিবারের তিনটি কবর কেউ মেনে নিতে পারছেন না। আমরা ওই পরিবারকে সান্তনা জানানোর ভাষা খোজে পাচ্ছি না।



এই বিভাগের আরও