নরসিংদীতে ঠিকাদারকে মারধরের অভিযোগে নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা

০৫ এপ্রিল ২০২২, ০৯:০৩ পিএম | আপডেট: ০৬ মে ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম


নরসিংদীতে ঠিকাদারকে মারধরের অভিযোগে নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীতে ২ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় এক ঠিকাদারকে মারধরের অভিযোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নরসিংদীর নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নরসিংদীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মো. কাইয়ুম মিয়া নামের ওই ঠিকাদার মামলাটি করেন।

গত ২৪ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে শহরের বিলাসদী এলাকার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কার্যালয়ে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। মামলাটির বাদী প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার মো. কাইয়ুম মিয়া নরসিংদীর শিবপুরের গোবিন্দপুর এলাকার আব্দুল বাতেনের ছেলে। তিনি শহরের ভেলানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত।

মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেছেন, এলজিইডির একজন ঠিকাদার হিসেবে নিজের মালিকানাধীন মেসার্স জননী এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নকাজের ঠিকাদারী করেন মো. কাইয়ুম মিয়া। পাশাপাশি তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খায়রুল হাসান নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন হাসান এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমেও নরসিংদীতে ঠিকাদারী কাজ পরিচালনা করেন। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ওই হাসান এন্টারপ্রাইজ আড়াই শতাংশ জামানতসহ শিডিউল জমা দিয়ে টেন্ডারে অংশ নিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৩ মার্চ নির্ধারিত কাজের বিপরীতে সরকারী বিধি মোতাবেক ১০ শতাংশ হারে ৩০ লাখ ৪৯ হাজার টাকা ব্যাংক গ্যারান্টি এলজিইডি কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। এ সময় টেন্ডার সিডিউলের সঙ্গে জমা দেওয়া পে-অর্ডার একজন উচ্চমান সহকারীর কাছে ফেরত চাওয়া হলে তিনি নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামান কার্যালয়ে উপস্থিত না থাকায় পরদিন যেতে বলেন।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পরদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবার ওই কার্যালয়ে গিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করে পে-অর্ডার ফেরত চান মামলার বাদী। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামান বলেন, পে-অর্ডার ফেরত নিতে হলে ২ লাখ চাঁদা দিতে হবে। ওই টাকা চাঁদা না দিলে ওই পে-অর্ডার বাজেয়াপ্ত করা হবে। বাদী দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে খন্দকার আসাদুজ্জামান ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর কক্ষে থাকা চেয়ার তুলে নিয়ে মো. কাইয়ুম মিয়ার মাথা বরাবর ছুঁড়ে মারেন। মাথায় না লাগলেও ছুঁড়ে মারা ওই চেয়ারের আঘাত তাঁর পিঠে ও হাতে লাগলে রক্তাক্ত জখম হয়। পরে মো. কাইয়ুম মিয়া ওই কক্ষ থেকে বের হয়ে সিড়ি দিয়ে নামার সময় খন্দকার আসাদুজ্জামান পেছন থেকে তাকে এলোপাতারি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে ফেলে দেন। উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করেন। এ সময়ও মা-বাবাকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ গালিগালাজ করছিলেন খন্দকার আসাদুজ্জামান।

ঠিকাদার মো. কাইয়ুম মিয়া জানান, আমার সঙ্গে যা যা ঘটেছে তার সব প্রমাণ কার্যালয়টির সিসিটিভি ফুটেজে রেকর্ড আছে। খন্দকার আসাদুজ্জামান একজন সরকারী কর্মকর্তা হয়ে আমাকে যেভাবে মারধর ও গালিগালাজ করেছেন, আমি এর বিচার চাই। তিনি আমাকে এই হুমকিও দিয়েছেন, তার কার্যালয়ে আবার যদি যাই তবে আমার জীবন শেষ করে দেবেন।

জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামান বলেন, আমার নামে কোন একজন ঠিকাদার মামলা করেছেন, বিষয়টি এই প্রথম আপনার কাছে শুনলাম। কোন ঠিকাদারকে আমি মারতে পারি, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? মামলার কাগজপত্র হাতে পেলে এই বিষয়ে বলতে পারবো।



এই বিভাগের আরও