নরসিংদীতে আনসারের কাছ থেকে লুট হওয়া দুই শটগান উদ্ধার, ১০ ডাকাত গ্রেপ্তার

০২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:৫৩ পিএম | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৬ পিএম


নরসিংদীতে আনসারের কাছ থেকে লুট হওয়া দুই শটগান উদ্ধার, ১০ ডাকাত গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদী বড় বাজারে টহলের সময় দুই আনসার সদস্যের কাছ থেকে লুট হওয়ার এক সপ্তাহ পর দুটি শটগান ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধারসহ ১০ আন্ত:জেলা ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। রোববার দিবাগত রাতে শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকা থেকে অস্ত্র দুটি উদ্ধার ও বিভিন্ন জেলা থেকে এক নারীসহ ডাকাত দলের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-শরীয়তপুরের জাজিরা থানার কুন্ডেরচর গণি মল্লিকের কান্দি এলাকার মোহাম্মদ দেওয়ানের ছেলে আনোয়ার দেওয়ান (৪২), একই জেলার দাইমুদ্দিন খলিফারকান্দি এলাকার সিরাজ খলিফার ছেলে দেলোয়ার খলিফা (৩৭), একই এলাকার মৃত সিরাজ খলিফার ছেলে মতি খলিফা (৪২), বিকিনগর মোড়লকান্দি এলাকার মৃত নূরুদ্দিন মোড়লের স্ত্রী আলেয়া বেগম (৪৫), মাদারীপুর জেলার উত্তর কাউয়াকুড়ি এলাকার মৃত ফজলু হাওলাদারের ছেলে কালু হাওলাদার (৩৮) ও ফরিদ হাওলাদার (৪৫), একই জেলার শিবচর থানার হাজী জব্বর হাওলাদারকান্দি এলাকার আব্দুর রব খাঁ'র ছেলে ফারুক খাঁ (২১), বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানার বালিয়াডাঙ্গা এলাকার শেখ আব্দুল মালেকের ছেলে শেখ আল মামুন (৩২), একই জেলার আফরা এলাকার মৃত শেখ মহিউদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৫৭) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার বাজিবিশারা এলাকার মৃত অহিদ মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৭)।

 

এর আগে ২৬ ডিসেম্বর দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বাজারে টহলের সময় দুই আনসার সদস্যের কাছ থেকে দুই শটগান ও ১০ রাউন্ড গুলি লুট করে ডাকাতরা।

 

সোমবার দুপুরে নরসিংদীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম।

পুলিশ সুপার জানান, ২৬ ডিসেম্বর রাতে নরসিংদী বাজারস্থ বণিক সমিতির অস্থায়ী ক্যাম্পের চার আনসার সদস্য বাজার টহল দিচ্ছিলেন। এসময় মেঘনা নদীতে নৌপথে আসা ১৮-২০ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল নরসিংদী বাজারে প্রবেশ করে। পরে দুই আনসার সদস্যকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ১০ রাউন্ড গুলিসহ দুটি শটগান ছিনিয়ে নেয় তারা। বাজারের সিসিটিভি ফুটেজে ডাকাতদলের উপস্থিতি ধারণ হয়। একই রাত তিনটার দিকে সদর থানার চরাঞ্চলের পঞ্চবটি বাজারে কয়েকটি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।  

আনসারের অস্ত্র লুটের ঘটনায় নরসিংদী সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত আনসার ভিডিপির কর্মকর্তা লুৎফর নাহার লতিফা বাদী হয়ে নরসিংদী সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারসহ জড়িতদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারের দল।  

তথ্যপ্রযুক্তি এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান শুরু করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বাগেরহাট এবং খুলনার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এক নারীসহ আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ১০ সদস্যকে  গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় শরিয়তপুরের জাজিরা এলাকায় মিজান নামে এক ডাকাতের আত্মীয় বাড়ি থেকে লুট হওয়া দুই অস্ত্র ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অস্ত্র লুটের ঘটনার রাতেই সদর থানার পঞ্চবটি বাজারের কয়েকটি দোকানে ডাকাতির ঘটনায়ও একই ডাকাতদলের সম্পৃক্ততা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

আনসার ও ভিডিপি, নরসিংদীর জেলা কমান্ডেন্ট তানজিনা বিনতে এরশাদ সাংবাদিকদের বলেন, জেলা গোয়েন্দা শাখা আন্ত:জেলা ডাকাতদলের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তারসহ লুট হওয়া অস্ত্র ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। বাকী ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার ও অন্যান্য ডাকাতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া অস্ত্র ও গুলি লুটের ঘটনার পর থেকে এসব উদ্ধারে আনসার ও ভিডিপির অপারেশন টিম ও মাঠ পর্যায়ের আনসার সদস্যরা কাজ শুরু করেন।    

তিনি আরও বলেন, নদী পথে এসে নরসিংদী বড় বাজারের স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির উদ্দেশ্য থাকলেও টহলের সময় সামনে পড়ে যাওয়ায় দুই আনসার সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র লুট করে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। পরে একই রাতে সদর থানার পঞ্চবটি বাজারের কয়েকটি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।