নরসিংদী- ১ (সদর): একজন চান ভোট অপরজন চান মুক্তি

২৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৫৮ পিএম | আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৬ এএম


নরসিংদী- ১ (সদর): একজন চান ভোট অপরজন চান  মুক্তি
নজরুল ইসলাম (আ’লীগ-ও-খায়রুল কবীর খোকন (বিএনপি)

নিজস্ব প্রতিবেদক
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নরসিংদী-১ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা চললেও প্রচারে অনেকটাই নিরব বিএনপি। একদিকে মহাজোট প্রার্থী লে: কর্ণেল (অব:) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (বীরপ্রতিক) নৌকা প্রতিকে ভোট চাইছেন। অপরদিকে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন জেলে থাকায় তার মুক্তি কামনা করছেন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
এছাড়া আসনটিতে জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতিকে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি লাঙ্গল প্রতিকে নির্বাচন করলেও শহরেই কোনো পোষ্টার বা প্রচারনা চোখে পড়েনি। এছাড়া জাকের পার্টি থেকে গোলাপ ফুল প্রতিক নিয়ে এড. আরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন থেকে হাত পাখা প্রতিক নিয়ে আশরাফ হোসেন ভূঁইয়া, গণফ্রন্ট থেকে মো. জাকির হোসেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) থেকে মোবারক হোসেন আকন্দ, ইসলামী ঐক্যজোট থেকে মাওলানা মো. ইসহাক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও নির্বাচনী মাঠে প্রচারনায় চোখে পড়ছে না এই সকল প্রার্থীদের প্রচারনা।


শিল্পাঞ্চলখ্যাত নরসিংদী-১ আসনটি শিক্ষানগরী আর বস্ত্রশিল্পের নগরী হওয়ায় সারাদেশে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। তাই এই আসনটির রাজনৈতিব গুরুত্ব অনেকাংশে বেশী। এই আসনটি মরহুম সামসুদ্দীন আহমেদ এছাক এর হাতধরে দীর্ঘদিন বিএনপির দখলে ছিল। সামসুদ্দীন আহমেদ এর মৃত্যুর পর উপ নির্বাচনে খায়রুল কবীর খোকন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীদের ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে নৌকা প্রতিক নিয়ে আসেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরু (বীরপ্রতিক)। তিনি প্রথম নির্বাচনেই বিএনপির খায়রুল কবীর খোকনকে পরাজিত করেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় সহজেই জয়ের পথ উন্মুক্ত হয় নৌকা তথা নজরুল ইসলামের। এই সুবাদে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পেয়ে যান। পরবর্তীতে হন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।


এবার একাদশ সংসদ নির্বাচনে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মহাজোট থেকে আবারও নৌকা প্রতিক পেয়ে যান নজরুল ইসলাম। ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিএনপির হয়ে খায়রুল কবীর খোকন ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে নির্বাচন শুরু করেন। খায়রুল কবীর খোকন মনোনয়ন জমাদানের পর পরই নাশকতা মামলায় আদালতে জামিন চাইতে গেলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করায় জেলেই থাকতে হচ্ছে তাকে। খায়রুল কবীর খোকনের ধানের শীষ প্রতিকে যাতে কেউ ভোট চাইতে না পাওে, সেজন্যে তার নেতাকর্মী ও কর্মী সমর্থকদের বিভিন্ন মামলায় পুলিশ আটক করে জেলে আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপি নেতাদের।
এখন নির্বাচনী মাঠে মহাজোট প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকরাই দিন রাত সমানতালে নৌকা প্রতিকে ভোট চেয়ে সভা সমাবেশ মিছিল মিটিং করে যাচ্ছেন। অপরদিকে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী খায়রুল কবীর খোকনের স্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী শিরিন সুলতানা তার কিছু সংখ্যক মহিলা কর্মীকে নিয়ে বিভিন্ন মহল্লায় প্রচারনাকালে পুলিশি বাধা ও নৌকার সমর্থকদের বাধার কারণে তারাও মাঠে নামতে পারছেন না বলে অভিযোগ তাদের।


একদিকে নৌকা প্রতিকের ব্যাপক প্রচার প্রচারনা পক্ষান্তরে বিএনপির খায়রুল কবীর খোকনের কারাবন্দী দশা থেকে মুক্তি চাইছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে নির্বাচনী মাঠের গুঞ্জন একজন চান ভোট, অপরজন চান কারামুক্তি।